পরীমনির মুক্তি চাইলেন আসিফ

সময় ট্রিবিউন | ১৪ আগষ্ট ২০২১, ১৯:৫৬

ঢাকায় সিনেমার সময়ের আলোচিত সমালোচিত নায়িকা পরীমনির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালতে গতকাল(১৩ আগস্ট) এই জামিনের আবেদন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে তাকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পরীমনির এই খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন কন্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। করেছেন মুক্তির আবেদনও। শনিবার (১৪ আগস্ট) তিনি তার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে পরীমনির মুক্তি দাবি জানান।

সময় ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য আসিফ আকবরের স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হল-

ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন ফোর্বস এর বিশ্লেষনে মেয়েটা ছিল শো’বিজে একজন প্রভাবশালী নারী। বাংলাদেশের ফেসবুক জগতে তার ছিল সর্বোচ্চ কোটি ফলোয়ার। এই নিয়ে মিডিয়াসহ দেশের মানুষের গর্বের শেষ ছিলনা। মা আগুনে পুড়ে মরেছেন দু’মাস কষ্ট পেয়ে। ব্যবসায়িক কারণে মেয়েটার বাবাও খুন হয়েছেন। সাপলুডুর সাপগুলো পুষে মইগুলো বেয়ে বেয়ে মেয়েটা হয়তো একটা জায়গায় পৌঁছেছে। মফস্বলের একটা মেয়ে এত উঁচুতে পৌঁছানোর পেছনে অবশ্যই যোগ্যতা ছিল, রহস্যের তো শেষ নেই।

রঙ্গীন দুনিয়ায় সব মেয়েরা খারাপ, আর পুরুষরা মহান। তারকাদের প্রতি সাধারণ মানুষের দেয়া সম্মানকে ব্যাকফুটে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোর একটা গায়েবী অভিশাপ। মেয়েটা দেশের সবচেয়ে বড় আলোচিত ক্রিমিন্যাল হয়ে গেলো হঠাৎ করেই??? সারা দেশের গলিতে গলিতে এরকম মজায় মত্ত থাকি আমরা ভোগী পুরুষরা। দোষ হয় শুধু মেয়েদের, সমস্ত অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু তারাই। এই মেয়েটা এতোটা পথ কাদের শেল্টারে এসেছে এই রহস্য উন্মোচিত হবে না কখনো। মেয়েটা অবশ্যই ভাল অভিনেত্রী। ফিল্মের ডাকসাইটে ডিরেক্টরদের ভাষায় সে ছিলো ছোট শাবানা (ম্যাডাম)। মেয়েটা দেশকে আরো সার্ভিস দিতে পারতো। দেশ নেয়নি, হয়তো সে মু্ক্তি পেয়ে আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে যাবে। নাচতে নেমে ঘোমটা দেয়া’র পুরনো কথাটা মনে পরে গেল। আবার লোকাল ভাষায়- ঘোমটার নীচে পোংটা নাচে, এই বাক্যটাও সামনে চলে এলো।

বেশী লিখার সাহস আমার নাই। আমি নিজেও প্রতিদিন যে কোনো সরকারি বাহিনীর রেইডের অপেক্ষায় থাকি। আকাশের যত তারা, …. ততো ধারা ফর্মূলাটা খুব মানি। সাত সাগর তেরো নদী পার হয়ে এতো মদ আর মাদক দেশে আসে কিভাবে? এর কোন যুক্তিযুক্ত উত্তর কি রাষ্ট্রের কাছে পাবো? ধরা পরে যায় নাদান বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কেউ কেউ। অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা অপরাধ। হরহামেশাই মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রায়ালের শিকার হতে হয় শো’বিজের মানুষদের। একটা রমরমা রসাত্মক গল্প কয়দিন চলে। দেশে আসলে এসব ছাড়াও কোটি সমস্যা আছে। চারঘন্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া মেয়েটার কপাল ভাল হাতকড়া পরতে হয়নি, আমি এই দেশে জাতীয় পুরষ্কারের সাথে হাতকড়াও উপহার পেয়েছি। একটাই আফসোস- মেয়েটা যে পরিমান সিকিউরিটি পেয়েছে সেটা আমি পাইনি। আজ ভদ্রলোকেরা আমাকে কমেন্টবক্সে প্রচুর গালি দিন প্লীজ।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দাবি জানাই- পরীমণি’র মুক্তি চাই। প্রয়োজনে তাকে রিহ্যাব করানো হোক। সে ভয়ঙ্কর অপরাধী নয়, অভিভাবকহীনতার শিকার একটা লক্ষ্যহীন নৌকা মাত্র। তার কোটি ফলোয়ার আজ হয়ে গেছে দ্বিগুন হেটার্স। ফলোয়াররা যে বিপদের কারণ হতে পারে- এটা বুঝতে হবে শো’বিজের মানুষদের। আজব দেশের সব আজব নাগরিকদের সালাম জানাই।

ভালবাসা অবিরাম…


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: