এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্লট দুর্নীতির মামলা

সময় ট্রিবিউন | ৮ অক্টোবর ২০২১, ০৪:০৬

সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা-ফাইল ছবি

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্লট বরাদ্দের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

মামলায় ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলাটি করেন।

দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির আরেকটি মামলা করে দুদক। এই মামলার বিচার শেষে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ মামলাটি বিচারাধীন। আগামী ২১ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এসকে সিনহা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় একটি প্লট বরাদ্দ পান। পরে তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে প্লটের জন্য আবেদন করে ৩ কাঠার প্লট বরাদ্দ করান। পরে তিনি প্রভাব খাটিয়ে ওই ৩ কাঠার প্লটের বদলে ৫ কাঠার প্লট নেন। পরে পূর্বাচলের প্লট বদল করে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরে একটি প্লট বরাদ্দ করান।

এসকে সিনহা নিজেই ওই প্লটের যাবতীয় অর্থ পরিশোধ করেন। তিনি নিজের ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তির পর ওই প্লটের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়োগ করেন জনৈক শংখজিৎ সিংহকে। যিনি এসকে সিনহার আত্মীয়। সংখজিৎ সিংহকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এ কাজে নিয়োজিত করান এবং তাকে বাড়ি নির্মাণ কাজের যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদনের জন্য নিয়োজিত রাখেন। ওই প্লটে ৯তলা ভবন নির্মাণের জন্য এসকে সিনহা তার বড় ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও সংখজিৎ সিংহের যৌথ নামে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় হিসাব (হিসাব নং-৪০০৮১২১৪৯০৪২) খোলেন। হিসাবটি সংখজিতের একক স্বাক্ষরে পরিচালিত হয়।

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর এসকে সিনহা তার নিজ নামে সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিমকোর্ট শাখার হিসাব থেকে (হিসাব নং- ৪৪৩৫৪৩৪০০৪৪৭৫) দুই চেকে এক কোটি ৪৯ লাখ ছয় হাজার এবং ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ওই যৌথ হিসাবে স্থানান্তর করেন।

এজাহারে বলা হয়, এসকে সিনহার আয়কর নথিতে উত্তরা আবাসিক এলাকায় নির্মাণাধীন ওই বাড়িটি দেখানো হয়েছে। বাড়ি নির্মাণের আয়ের উৎস হিসাবে জনৈক খালেদা নামীয় নারীর কাছে ফ্ল্যাট বিক্রির অগ্রীম বাবদ চার কোটি ৪০ লাখ টাকা, তার ভাই সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রি বাবদ এক কোটি ৪৯ লাখ ছয় হাজার টাকা, এসকে সিনহার মেয়ে সূচনা সিনহার কাছ থেকে ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং ব্যাংক থেকে ঋণ হিসাবে ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ৭১১ টাকা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দুদকের অনুসন্ধানে ওই নারী কোনো টাকা দেননি বলে প্রমাণিত হয়।

অর্থাৎ আসামি এসকে সিনহা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে নিজের ভাই ও আত্মীয়ের নামে ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তা অর্জনের ক্ষেত্রে অবৈধ পন্থায় বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: