ডিবির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সাকিব-হিরো আলম 

সময় ট্রিবিউন ডেস্ক | ১৭ মার্চ ২০২৩, ০০:৫৪

সংগৃহীত
পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলার আসামি আরাভ খানের দুবাইয়ের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাওয়ায়  ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমসহ অন্যান্য তারকা‌দেরও তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন ডিএস‌পির অ‌তি‌রিক্ত ক‌মিশনার (ডি‌বি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।  
 
ডিবিপ্রধান জানান, ডিবি থেকে নিষেধ করার পরও সাকিব ও হিরো আলম দুবাইয়ে গিয়েছেন। তদন্তের প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। জুয়েলারির দোকানে কাদের বিনিয়োগ আছে সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
 
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ‌তি‌নি এই কথা বলেন। 
 
দেশজুড়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার পরও সাকিব দুবাইয়ের সেই আলোচিত আরাভ জুয়েলারি উদ্বোধন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিড় ঠেলে ওই প্রতিষ্ঠানে এলেও মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তিনি। 
 
ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) স্কুল অব ইন্টেলিজেন্স পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার ৬ নম্বর পলাতক আসামি আরাভ খান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে তার জুয়েলারি শপ 'আরাভ জুয়েলার্স' উদ্বোধন করতে যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
 
সেই হত্যা মামলার এজাহার অনুযায়ী, আরাভের আসল নাম রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয়। পুলিশে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রেও তাকে পলাতক আসামি দেখানো হয়েছে।
 
পুলিশ সদস্য মামুন খুনের এ মামলায় আরাভের বদলে আবু ইউসুফ লিমন নামের এক তরুণকে কারাগারেও পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) খেলার সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি হিসেবে লিমনকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে জানাজানি হলে আদালত লিমনকে খালাস দেন।
 
ডিএস‌পির অ‌তি‌রিক্ত ক‌মিশনার (ডি‌বি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমাদের পুলিশের একজন মেধাবী কর্মকর্তা ছিলেন পরিদর্শক মামুন। তাকে শুধু হত্যাই করেনি, মরদেহ যেন না পাওয়া যায় তাই কালীগঞ্জের জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনার পর মামলা হয়। ডিবি তদন্ত করেছে। আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম পালিয়ে গেলেও নকল একজন আসামি জেলখানায় দেন। পরবর্তী সময়ে ডিবির তদন্তে নকল আসামির ঘটনা সামনে আসে। এর মধ্যে মূল আসামি দুবাইয়ে সোনার দোকানের মালিক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই যান।
 
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি। একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছেন। মিডিয়ায় ও অনেকের বলার পরও সাকিবসহ অন্য তারকারা খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন। তার সোনার দোকান উদ্বোধনে যোগ দিয়েছেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে ইন্টারপোলের সহায়তায় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
 
তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কতগুলো মামলার অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১২টা ওয়ারেন্ট রয়েছে। মামলা রয়েছে, চার্জশিটও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 
 
দুবাইয়ে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। একই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মঞ্চ মাতান দেশের আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।   
 
এছাড়াও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, গায়ক নোবেল, রুবেল খন্দকার, বেলাল খান, জাহেদ পারভেজ পাভেলের মতো অনেকে সেখানে যান।
 
খুনের মামলার ফেরারি আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে আরাভের দুবাইয়ে জুয়েলারি ব্যবসার বিষয়টি নজরে এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের। ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তাকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানায় ডিবি।
 
ভারতীয় পাসপোর্ট অনুযায়ী আরাভ খানের জন্ম ১৯৯৩ সালের ৩১ জুলাই। ৩০ বছর বয়সি আরাভ খান দুবাইয়ে হাজার কোটি টাকা মূল্যের জুয়েলারি শপ খুলে সেখানকার ব্যবসায়ীদেরও চমকে দিয়েছেন।
 
 

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: