ছেলের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে মাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার তিন ধর্ষক

আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি | ২২ আগষ্ট ২০২২, ১১:০৮

সংগৃহীত

স্বামীর বন্ধুর বাড়ি থেকে বোনের বাড়িতে যাওয়ার পথে এক গৃহবধূকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক গৃহবধূ।

শিশুসন্তানের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২০ আগস্ট) হরিপুর থানায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।

এর আগে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে রানীশংকৈল উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা বাজার এলাকা একটি আমবাগানে এ ঘটনা ঘটে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দক্ষিণ পাড়িয়া এলাকার ওই নারী গত শুক্রবার (১৯ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তার সাত বছর বয়সী ছেলে মাসুমকে নিয়ে তিনি হরিপুর উপজেলার রুহিয়া এলাকায় স্বামীর বন্ধুর বাড়ি থেকে বোনের বাড়িতে যাওয়ার সময় রাণীশংকৈল উপজেলার কামারপুকুর অটো স্ট্যান্ড হইতে ধর্ষিত (২৮)কে অটোযোগে অপহরণ করে বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা বাজারের পুর্ব উত্তর পাশে আনোয়ার মাস্টারের আম বাগানের ভিতরে নিয়ে যায়। বাগানে ভিতরে অপহরণকারীরা ওই গৃহবধূর ছেলে মাসুমের গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে জিম্মি করে তার মাকে পর্যায়ক্রমে গণধর্ষণ করে বিবস্ত্র করে।

মামলার আসামিরা হলেনঃ হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের হাটপুকুর গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে ফজলুর রহমান (২২), চাপধা পিপলা গ্রামের করিমুল ইসলামের ছেলে রিসাদ (২১), একই এলাকার গুচ্ছগ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে আকাশ (২২) এবং রকিম ও লসকর নামে অজ্ঞাত দুজন।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ওই নারী দুই সন্তানের মা। গত শুক্রবার বিকেলে হরিপুর উপজেলার রুহিয়া চাপধা এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রানীশংকৈল হয়ে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে রানীশংকৈল উপজেলার কামারপুকুর বাসস্ট্যান্ডে কয়েক যুবক অটোচালকের যোগসাজশে ওই নারীকে কৌশলে তুলে নিয়ে যায়।

পরে বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা বাজার এলাকার একটি আমবাগানের ভেতরে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা সাত বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে ভয়ভীতি দেখায় ধর্ষকরা। এরপর রাত ১২টার সময় ওই যুবকরা ভুক্তভোগী ওই নারীকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ফজলুর রহমান নামে একজনকে আটক করে ৯৯৯-এ ফোন দেন। পরে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে।

এরপর ধর্ষক ফজলুর রহমান ও ভিকটিমের ভাষ্যমতে হরিপুর থানা পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে রিসাদ ও আকাশকে আটক করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে শনিবার হরিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে ওই ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

এ বিষয়ে হরিপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, অভিযুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে রাতে আদালতে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন। আদালতের নির্দেশক্রমে তাদের কারাগারের পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া অন্য দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রকিবুল আলম জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন। কয়েক দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: