স্ত্রীর করা মামলায় পুলিশ কর্মকর্তার সশ্রম কারাদণ্ড, জরিমানা

এহসান রানা, ফরিদপুর | ১৭ আগষ্ট ২০২২, ০৭:৩১

সংগৃহীত

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দোহাকে দুই বছর ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এসময় তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. শাহ মো. আবু জাফর এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ আদেশ দেন। এসময় পুলিশ পরিদর্শক মো. শামসুদ্দোহা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, পুলিশ পরিদর্শক মো. শামসুদ্দোহা গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। সে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত। এর আগে নারী নির্যাতন দমন আইনে তার স্ত্রী ফারজানা খন্দকারের করা মামলায় তাকে ঢাকার রাজাবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

উল্লেখ্য , স্ত্রী ফারজানা খন্দকার বাদী হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় শামসুদ্দোহাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

পরে এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী রাতে ঢাকার রাজাবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গুলশান থানা পুলিশ। পরেরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারী সকালে শামসুদ্দোহাকে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় আনা হয় ও বিচারের জন্য ফরিদপুরের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

ফারজানা খন্দকারের ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট পারিবারিকভাবে শামসুদ্দোহার সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। ওই বছরের নভেম্বর মাসে সামসুদ্দোহা তাকে তার কর্মস্থল যশোরে নিয়ে যান। সেখানে ভাড়া বাসায় উঠেন। যশোরে যাওয়ার কয়েক দিন পর থেকেই স্বামীর আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন স্ত্রী। ওই সময় স্ত্রী ফারজানা জানতে পারেন, অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত শামসুদ্দোহা। এ ব্যাপারে তিনি বাধা দিলে ওই সময় থেকেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়।

এর কিছুদিন পর শামসুদ্দোহা প্রমোশনের জন্য ৭০ লাখ টাকা বাবার কাছ থেকে এনে দিতে বলেন। তিনি ১৫ লাখ টাকা এনেও দেন, কিন্তু সে তাতে খুশি হয়নি। এরপর নির্যাতন বাড়তে থাকে।

শামসুদ্দোহা প্রতিদিন নেশা করে মারপিট করত বলে দাবি করেন তার স্ত্রী। ওই সময় সে সেখান থেকে বাবার বাড়ি চলে আসেন। তখন স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবার বাড়িতেই ছেলে সন্তানের মা হয়। সন্তানের বয়স এখন দুই বছর।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: