গাইবান্ধায় প্রদৃপ্ত প্রকল্পের উপজেলা অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি | ২৮ জুলাই ২০২২, ০৫:৩৭

সংগৃহীত

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউণ্ডেশনের প্রোমোটিং ডিজাস্টার রেডি ইনক্লুসিভ প্রিপেয়ার্ডনেস টুওয়ার্ডস অ্যাডাপটেশন (প্রদৃপ্ত) প্রকল্পের উপজেলা অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, বেসরকারি সংস্থাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দাতা সংস্থা মারগারেট এ.কারগিল ফিলানথ্রোপিসের অর্থায়নে এই প্রকল্পে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে কেয়ার বাংলাদেশ। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফুল আলম। সঞ্চালনা করেন প্রদৃপ্ত প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. ফারুক হোসেন।

প্রথমে পরিচয় পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেয়ার বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জগলুল রাজীব। তারপর মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রদৃপ্ত প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন কেয়ার বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর বায়জীদ বোস্তামী। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদর উপজেলা কমাণ্ডের সাবেক কমাণ্ডার আলী আকবর মিয়া, দৈনিক মাধুকরের সম্পাদক কে এম রেজাউল হক, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুস সাকিব, কামারজানী ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, মোল্লারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুজ্জামান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু ও ফ্রেন্ডশীপের প্রতিনিধি আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

কর্মশালার আলোচনায় উঠে এসেছে- পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। নাহলে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের সৃষ্টি হবে ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। দুর্যোগকালীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিতসহ দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য স্পিডবোট প্রস্তুত রাখতে হবে ও আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁঁছানোর জন্য নৌকার ব্যবস্থা রাখতে হবে। বন্যা, নদীভাঙন, শৈত্যপ্রবাহ ও খরা সবচেয়ে বড় সমস্যা এ জেলার। এসব দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। বন্যায় বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিস্কাশনের জন্য সুব্যবস্থা করতে হবে।

উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোফাখখারুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাসলিমা সুলতানা স্মৃতি, গাইবান্ধা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শহীদ আহমেদ এবং সদর উপজেলার ১৩ ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কৃষি, প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা, প্রকৌশল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা, সমবায় অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য, পল্লী উন্নয়ন বোড,র্ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও আনসার ভিডিপিসহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জন অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস (ডিআরআর), স্থায়ীত্বশীল প্রতিষ্ঠান ও দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রস্তুত জনগোষ্ঠি গঠনের মাধ্যমে সার্বজনীন সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রদৃপ্ত প্রকল্পটি গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ও কামারজানি এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ও কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটিতে প্রত্যক্ষ উপকারভোগী ও অংশগ্রহনকারী রয়েছেন ২২ হাজার ২৪৮ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।

প্রকল্পটির উদ্যোগে টেকসই কৃষি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ (পানি) ব্যবস্থাপনার জন্য কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রম, দুর্যোগোত্তর পুনর্বাসন/জরুরী সারা প্রদানের জন্য তহবিল গঠন ও ব্যবহার, গ্রাম সঞ্চয় এবং ঋণদান সমিতি (ভিএসএলএ) দল গঠন, সিপিপি এবং এফপিপির আদলে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম প্রদান, ইউনিয়নভিত্তিক দুর্যোগ পরিকল্পনা তৈরি করা, লার্নিং শেয়ারিং, সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, এনজিও কর্মী ও জনসাধারণের সাথে কর্মশালা ইত্যাদি, কমিউনিটির সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচি (ডিআরআর মেলা, সচেতনতামূলক কার্যক্রম), স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রচারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: