ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের শিশুপুত্রের হত্যার ঘটনায় ১৩ দিন পর মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি | ২ জুন ২০২২, ১৮:৫৭

সংগৃহীত

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির শিশু পুত্র রাফসানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১৩দিন পর থানায় মামলা হয়েছে।

মামলায় ৯ জনের নামউল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। 

নিজে বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে সদরপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত রাফসানের পিতা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি।

এ হত্যা মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, মোস্তফা মৃধা (৫০), নাজমুল ইসলাম বাবু মোল্লা (৪২), এরশাদ মোল্লা (টাওয়ার থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যাকারী) (৩৮), ইমরান মোল্লা (৩০), রাকিব মোল্লা (২৪), রুহুল আমিন মোল্লা (৫৩), আলমগীর (৪০), রবিউল মোল্লা (২৫) ও সামেলা বেগম (৫৮)।

এদের মধ্যে আলমগীরের বাড়ী নোয়াখালী জেলার চাটখালী থানার ফকিরহাটি গ্রামে। বাকি সবার বাড়ী সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। 

 

উল্লেখ্য, গত ১৮ মে রাত সাড়ে ৭টার দিকে সদরপুর উপজেলার সদরে পোস্ট অফিস সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বাড়িতে ঢুকে এরশাদ মোল্লা তার শিশুপুত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং স্ত্রী দিলজাহানকে কুপিয়ে আহত করে। পরে এরশাদ আটরশি এলাকায় টিএন্ডটি টাওয়ারে উঠে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।

বর্তমানে দিলজাহান ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে ঢেউখালী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির সাথে বিরোধ চলছিল একই এলাকার মোস্তফা মৃধার। এ বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সম্প্রতি, পারিবারিক কলহের জের হিসাবে এরশাদ শেখ ও তার স্ত্রীকে নিয়ে শালিস বৈঠক করেন চেয়ারম্যান। সেই শালিসে এরশাদ শেখকে জরিমানা করা হয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের উপর ক্ষিপ্ত হয় এরশাদ শেখ। এরশাদ শেখের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে মোস্তফা মৃধাসহ আসামীরা গত ১৮ মে চেয়ারম্যানের সদরপুর উপজেলা সদরের বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা তার শিশু পুত্র রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা করে। কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করা হয় স্ত্রী দিলজাহান রত্নাকে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, মামলার দুই নম্বর আসামী নাজমুল ইসলাম বাবু মোল্লা বিগত ১৬ মে দুপুরে চেয়ারম্যানকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে বলেন, চেয়ারম্যান হলেই সব বিষয়ে নাক গলাতে নেই। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। 

ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি জানান, রাজনৈতিক কারনে আসামীরা আমাকেসহ পরিবারকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। আমি ঢাকায় অবস্থান করার কারনে প্রানে বেঁচে যাই। আসামীরা নৃসংশভাবে আমার শিশু পুত্রকে খুন করে। আমার স্ত্রীকেও কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করে। সে এখনও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মামলা করতে দেরী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিশু পুত্রকে দাফনের পর আমি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: