‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করে আমরা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম’

সময় ট্রিবিউন | ৩০ মার্চ ২০২১, ২১:২৯

সংসদ সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান-ফাইল ছবি

মুহম্মদ ফারুক খান:

রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনে মানুষের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় আসে। বাঙালিদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল ১৯৭১ সাল। সেই সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে সব বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজ এসেছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি একসঙ্গে।

আমরা যারা বেঁচে আছি- এটা তাদের জন্য বড় সৌভাগ্যের। আমাদের গর্বের মুহূর্ত। আমরা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম।

আর একটি বিষয় এই যে, আমরা এমন একটি সময় দুটো উপলক্ষ পালন করছি, যখন জাতির পিতার হাতেগড়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায়। আমার জন্য চরম সৌভাগ্য, আমি এ দলের এক ক্ষুদ্র কর্মী। আমরা ক্ষমতায় থেকে একসঙ্গে দুটো উপলক্ষ পালন করতে পেরেছি।

অন্যরা ক্ষমতায় থাকলে হয়তো তাদের মতো করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতো। কিন্তু জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন থেকে জাতি বঞ্চিত হতো। বঙ্গবন্ধুর দল ক্ষমতায় থাকার কারণে তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালন থেকে মানুষ আজ বঞ্চিত হয়নি।

আমরা এমন এক সময় সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, যখন বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে জায়গা করে নিয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেখানে নেতিবাচক, সেখানে বাংলাদেশ ভালোভাবেই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে।

স্বাধীনতার সময় যারা বলেছিল বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে, ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়াবে, সেখানে আমরা ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে তো ঘুরছিই না, বরং অন্যদের চেয়ে অনেক ভালো আছি। বিশ্বে আমরা আজ উন্নয়নের রোল মডেল।

যারা আমাদের নিয়ে বড় বড় কথা বলেছিল তাদের অবস্থাটাও এখন আমরা জানি। তাদের তুলনায় আমরা কোভিড-১৯ ম্যানেজমেন্ট অনেক ভালো করেছি। আমরা সকলে মিলে দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করেছি। আরো ভালো হয়তো করা যেত। তারপরও বিশ্ব কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা।

বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলে তার প্রমাণও মিলেছে জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তীর ‍উৎসবে। প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধানরা আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে বাংলাদেশে এসেছেন। এটা অনন্য দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সুসম্পর্ক নেই। সেখানে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক নিয়ে চলতে সক্ষম হয়েছে। সশরীরে আসতে না পারলেও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাদের বার্তা পাঠিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- বঙ্গবন্ধুর সেই নীতির অনুসরণ করে চলতে পারার জন্যই সবার সঙ্গে আমাদের এই সদ্ভাব।

দেশের সার্বিক উন্নতি যতটা হয়েছে তাতে অসন্তুষ্ট নই। কারণ উন্নয়নের সীমারেখা নেই। সবাই চায় আকাশসম উন্নয়ন। আমাদের প্রত্যাশাও এমন। বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে আমরা অনেক ভালোই করেছি। প্রত্যাশা করি, এটাকে ধরে রেখে আরও এগিয়ে যাবো।

লেখক: সংসদ সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: