
পবিত্র কোরআন শরীফের ২৬টি আয়াত বাদ দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে আদালত অযৌক্তিক এই আবেদন করায় আবেদনকারীকে ৫০ হাজার রূপি জরিমানা করেছে।
উত্তরপ্রদেশের শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি গত ১১ মার্চ আদালতের কাছে করা ওই আবেদনে বলেছিলেন, চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের মদত দেয় কোরআনের ২৬টি আয়াত রয়েছে। যা ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য এবং অখণ্ডতার জন্য বিপজ্জনক। কোরআনের ওই ২৬টি আয়াত ভারতের স্থানীয় ভূমি আইনের লঙ্ঘন এবং চরমপন্থাকে উসকে দিচ্ছে বলে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদনে অভিযোগ করে।
রিজভি তার আবেদনে বলেছিলেন, কোরআনের ২৬টি আয়াত সহিংসতার প্রচার করছে এবং সেগুলো কোরআনের মূল সংস্করণের অংশ নয়। পরবর্তীতে এসব আয়াত কোরআনে সংযোজন করা হয়েছে। যে কারণে পবিত্র কোরআন থেকে আয়াতগুলো মুছে ফেলা উচিত। এসব আয়াতকে অসাংবিধানিক এবং অকার্যকর হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি এ বিষয়ে মতামতের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ ধর্মীয় কমিটি গঠনের দাবি তুলেছিলেন রিজভি। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ বা উপযুক্ত আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিজেদের নীতি স্পষ্ট করার জন্যও কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রোহিংটন এফ নরিম্যান নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেন, শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান কোরআনের আয়াত বাদ দেওয়ার যে আবেদন করেছেন তা একেবারে অযৌক্তিক। তার এমন আবেদনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়। পরে শুনানি শেষে আদালতের বিচারকরা কোরআনের আয়াত বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেন এবং আবেদনকারীকে ৫০ হাজার রূপি জরিমানা করেন।
সুপ্রিম কোর্টে পবিত্র কোরআনের আয়াত বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করায় ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিভিন্ন সংগঠন ও ধর্মপ্রচারক ওই শিয়া নেতার ব্যাপক সমালোচনা করেন।
উত্তরপ্রদেশের শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান গত ১১ মার্চ আদালতে আবেদন করার পর দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তরপ্রদেশে বিজেপি নেতারা সৈয়দ রিজভির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: