নাশকতায় জড়িতদের বিচার চেয়ে হেফাজত থেকে কাসেমীর পদত্যাগ

সময় ট্রিবিউন | ২৩ এপ্রিল ২০২১, ২৩:১১

হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী-ছবি: সংগৃহীত

মোদিবিরোধী আন্দোলনে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের প্রতিবাদে এবং সহিংসতায় জড়িতদের বিচার দাবি করে সংগঠন থেকেই পদত্যাগ করেছেন থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী।

মুফতি আব্দুর রহিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদেও দায়িত্বরত ছিলেন। উভয় পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানান।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠিয়ে নিজের পদত্যাগের কথা জানান তিনি।

মুফতি কাসেমী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত হতে পারে না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্ত কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় থাকি এবং আমার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মাদরাসাসমূহের শিক্ষক ও ছাত্রদের এ সমস্ত দেশ ও ইসলামবিরোধী কাজে যোগদান না করতে বাধ্য করি।’

কাসেমী আরও বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি করা এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ জানমালের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তাতে আমি এবং আমার মাদরাসার কোনো ছাত্র অংশগ্রহণ করেনি। আমি হেফাজতে ইসলামের চলমান কোনো কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত নই। তাদের সব ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রমকে শরীয়তসম্মতভাবে অবৈধ মনে করি। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে হেফাজতে ইসলামের সব কার্যক্রম ও জাতীয় এবং জেলা কমিটির পদসমূহ থেকে পদত্যাগ করছি। যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।’

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এসময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌরমিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরিসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ১২ জন নিহত হন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: