তিয়েনআনমেন স্কয়ারের আন্দোলন: নিহতদের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মোমবাতি প্রজ্বালন

সময় ট্রিবিউন | ৫ জুন ২০২১, ০৪:৫৯

চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্মরণে শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচী পালন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ-ছবি: সময় ট্রিবিউন

চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

শুক্রবার (৪ জুন) সন্ধ্যা সাতটায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুনের সঞ্চালনায় মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী চীনের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রত্যক্ষ মদদে ১৯৮৯ সালের ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছিল। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল শহীদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। চীনে আজও পর্যন্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি একটি স্বৈরতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। জীবন বিধ্বংসী অস্ত্র করোনা ভাইরাস ছড়ানোর অপরাধে আন্তর্জাতিক আদালতে চীনের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।"

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন বলেন, "১৯৮৯ সালের ৪ জুন চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্বজনদের নিকট চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। স্বজনদের পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যান্য রাজনেতিক দলগুলোকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে চীনে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের গণতন্ত্রকামী নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"

তিনি বলেন, "জিনজিয়াং প্রদেশে রাষ্ট্রীয় মদদে আটকে রাখা ১০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। চীনের নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কর্তৃক চীনের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ১৯৪৯ সালে তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণহত্যার জন্য চীন আজও পর্যন্ত অনুতপ্ত হয়নি যা স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ। চীনের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।"

আল মামুন আরোও বলেন, "একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করার অপরাধে চীনকে বাংলাদেশের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ঢাকাস্থ চীন দূতাবাস তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ১৫ আগষ্টে জন্মদিনের উপহার পাঠিয়েছিল। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকীতে খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের উপহার পাঠানোর মাধ্যমে চীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। চীন-পাকিস্তানের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণহত্যার জন্য নিহতদের পরিবারের নিকট চীনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করে নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকাস্থ চীন দূতাবাস ঘেরাওসহ আরোও কঠোর কর্মসূচী পালন করবে।"


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: