আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী

সময় ট্রিবিউন | ১২ অক্টোবর ২০২১, ০০:৫৩

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চাই। এ ব্যাপারে রাশিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সোমবার (১১ অক্টোবর) সকালে গণভবনে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ সহযোগিতা চান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পাবনার রূপপুরে রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। রোসাটম এই সহযোগিতা দিয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী রোসাটমের মহাপরিচালককে স্থানীয় জনগণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আহ্বান জানান। যাতে তারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি) চালাতে পারে।

আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পারস্পরিক সহযোগিতা পারমাণবিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হবে। আরএনপিপি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

তিনি স্থানীয় কর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য জনবলসহ ২০ হাজারের বেশি মানুষ আরএনপিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। তিনি বলেন, অনেক বাংলাদেশি কোম্পানিও সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছে।

রোসাটমের মহাপরিচালক আরএনপিপি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পরমাণু কমিশনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন।

নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আরএনপিপির নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তারা প্লান্টের কাছাকাছি এলাকায় সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর সামনে আরএনপিপির কারিগরি ও নিরাপত্তার দিকগুলোও উপস্থাপন করেন। আলেক্সি লিখাচেভ আরএনপিপি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন রাশিয়ান ফেডারেশনের সমর্থনের কথাও স্মরণ করেন। তিনি মহাপরিচালককে আরও বলেন, করোনা বাংলাদেশের অগ্রগতি কিছুটা থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু এখন তা কাটিয়ে উঠে এগিয়ে যাচ্ছে।

রোসাটমের মহাপরিচালক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আরএনপিপিতে কর্মরত ৯০ শতাংশের বেশি রাশিয়ান নাগরিককে তারা টিকা দিয়েছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) মূল যন্ত্র রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজের উদ্বোধন করেছেন। যা রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। আরএনপিপির মূল ইউনিটে রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি উৎপাদনের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে চলেছে।

রোসাটম মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ইউনিট-১ এর ভৌত কাঠামোর অভ্যন্তরে রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রপাতির স্থাপন সম্পন্ন হয়। ফলস্বরূপ, এই ইউনিটের চুল্লি ভবনের ভেতরের কাজ শেষ হওয়ার কাছাকাছি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রাশিয়ার সেরা কর্ম কৌশল চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে এবং প্যাসিভ সিস্টেমের অনন্য সংমিশ্রণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পিত স্তরের নিশ্চয়তা দেবে।

পাবনার আরএনপিপির দুটি ইউনিট রয়েছে, যার প্রত্যেকটির ক্ষমতা ১২শ’ মেগাওয়াট। এটি দেশের প্রথম এ ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প।

 

সূত্র : বাসস

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: