গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী-শ্বশুর আটক

সময় ট্রিবিউন | ২২ মে ২০২১, ০৫:০৫

চট্রগ্রাম

চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ে সেলিনা আক্তার মনি (৩৫) নামে এক গৃহবধূর গলায় ফাঁস লাগানো ঘরের তীরের সাথে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে সেলিনার পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ মে) সকালে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার সাতভাইয়া বাড়ির রবিউল হোসেনের রান্নাঘর থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) মর্গে প্রেরণ করেছে। এই ঘটনায় নিহত সেলিনার স্বামী আলতাফ হোসেন (৩৮) ও শ্বশুর রবিউল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে মিরসরাই থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সেলিনার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৮ মাস পূর্বে সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার সাত ভাইয়ার বাড়ির রবিউল হোসেনের ছেলে আলতাফ হোসেনের সাথে মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর গ্রামের মকবুল আহম্মেদ বাড়ির মৃত সফিউল আলমের মেয়ে সেলিনা আক্তার মনির বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোভাবে সংসার করলেও এরপর থেকে সেলিনাকে বিভিন্ন সময় স্বামী মারধর করতো।

সেলিনার মা মনোয়ারা বেগম প্রকাশ মনাধন বলেন, আমার মেয়ে বিয়ের পর থেকে ওই বাড়িতে শান্তি পায়নি। স্বামী-শ্বশুর মিলে আমার মেয়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করতো। আমার মেয়ে ৩ মাসের গর্ভবতী ছিল। গত কয়েকদিন ধরে তাকে অনেকবার মারধর করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেলিনা ফোনে আমার আরেক মেয়েকে জানায়, তাকে (সেলিনা) ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে। না হয় স্বামী শ্বশুর ওকে মেরে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত তাই করল। আমার মেয়েকে খুন করে তার লাশ ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। শুক্রবার সকালে ওই এলাকার মেম্বার আমার মেয়ে মারা গেছে বলে খবর দেয়। আমি থানায় মামলা করব, আমার মেয়েকে যারা খুন করেছে আমি তাদের শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান রহমান বলেন, শুক্রবার সকালে মঘাদিয়া ঘোনা এলাকায় এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে ছুটে যাই। সেখান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। এরপর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, যতটুকু জেনেছি তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। সর্বশেষ বৃহম্পতিবার রাতেও স্ত্রীকে মারধর করেছে স্বামী আলতাফ। এই ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূ সেলিনার স্বামী আলতাফ হোসেন ও শ্বশুর রবিউল হোসেনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: