ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার দাফন সম্পন্ন 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি | ২৬ জুলাই ২০২২, ০৪:৫৯

সংগৃহীত

সদ্য প্রয়াত মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সাংসদ মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার (৭৬) দাফন সম্পন্ন হয়েছে

সোমবার বিকেলে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের গটিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কস্থ মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ক্যান্সারে ভুগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের জামাইকা ইসলামিক সেন্টারে ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সবস্তরের জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর নিউইয়র্ক থেকে মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায় সোমবার সকালে। পরে তাকে সড়কপথে নেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনের জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। সেখানে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ও সর্বস্তরের জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখান থেকে তাকে সড়কপথে নেওয়া হয় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর থেকে তাকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে সাঘাটার বোনারপাড়ায় নেওয়া হয় দুপুরে। সেখান থেকে ফজলে রাব্বী মিয়াকে সড়কপথে নেওয়া হয় ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এখানে ফজলে রাব্বী মিয়াকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শাজাহান খান, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সাংসদ মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সাঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরহাদ আবদুল্লাহ হারুন বাবলু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই অধ্যক্ষ ফরহাদ রাব্বী। এরপর তৃতীয় জানাযা নামাজ সম্পন্নের পর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের জনসাধারণ। পরে ফজলে রাব্বী মিয়াকে নেওয়া হয় গটিয়া গ্রামে। সেখানে তার বাড়ী সংলগ্ন মসজিদে শেষ জানাযা নামাজের পর তাকে নেওয়া হয় পারিবারিক কবরস্থানে। সেখানে বিকেলে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাযার নামাজে জনপ্রতিনিধিসহ জেলার সাত উপজেলা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাধারণ জনগণ, শুভাকাঙ্খী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তিনি প্রথমে আইনজীবী হিসেবে গাইবান্ধা আদালতে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের পর তিনি ২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৪ সালের দশম সংসদ থেকে আজীবন মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

ফজলে রাব্বী মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ২০২০ সালের ২৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান। তার দুই ছেলে অনেক আগেই মারা গেছে। এছাড়া তার রয়েছে তিন মেয়ে। তাদের মধ্যে ফারজানা রাব্বী বুবলি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: