ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের মুখের ভাষায় হাইকোর্টের নিন্দা!

সময় ট্রিবিউন | ১০ আগষ্ট ২০২১, ১৯:৪০

কামরুন নাহার-ফাইল ছবি

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপের ভাষায় একধরণের নিন্দায় পড়ে গেছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট বলছেন, ফোনালাপে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তিনি তা সত্যি হলে, অবশ্যই তা নিন্দনীয়। এটা অপ্রত্যাশিত। তার মুখ থেকে এ ধরনের ভাষা আশা করা যায় না।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ মন্তব্য করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। ওই তদন্ত রিপোর্ট দেখে আগামী ১ সেপ্টেম্বর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।

গত ৮ জুলাই ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই ছাত্রীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম রিট দায়ের করেন। রিটে শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও গভর্নিংবডির সভাপতিকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার অডিওতে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি এ কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। কারণ তিনি অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়বে।

সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ দুজনের ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়।

ওই ফোনালাপের এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুলকে বলতে শোনা যায়, আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কেউ (কোনো... বাচ্চা) যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব। আমি শুধু ভিকারুননিসা না, আমি তাকে দেশ ছাড়া করব।

অধ্যক্ষ ও অভিভাবক ফোরাম নেতার সাড়ে ৪ মিনিটের ওই কথোপকথন এখন সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। সেই অডিও ফোনালাপে এমন কিছু গালি রয়েছে যা প্রকাশের অযোগ্য। এতে বিব্রত ভিকারুননিসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

ফাঁস হওয়া ওই অডিও ভিকারুননিসার দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হেনেছে বলে মন্তব্য করছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্যরা।

তারা বলছেন, অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এ বছরের প্রথম দিন যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ যদি তাকে স্কুলে আসার বিষয়ে অনুরোধ করেন, তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, সচিবালয় এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তার যোগাযোগ আছে বলে গভর্নিং বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের কাছে দাবি করেন তিনি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: