১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিল সহকারী প্রক্টর, আত্মহত্যার চেষ্টা

সময় ট্রিবিউন | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:১৬

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়-ফাইল ছবি

শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪জন ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজমুল নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী লজ্জায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে জানাজানি হয়।

জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকা দেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করে। এরপরও পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় আগে থেকেই দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। সবার সামনে এভাবে তাদের লাঞ্ছিত করার পর ওই শিক্ষক জোর করে তাদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন।

ঘটনাটি ঘটানোর সময় একই বিভাগের সহকারী প্রক্টর রাজিব অধিকারি ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ না করে সেখানে নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এদিকে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা শুরুর আগে লাঞ্ছিত পরীক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠিরা এ ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর ফটকে জমায়েত হয়। এসময় তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি ও চাপ দিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করা হয়।

ঘটনার পর থেকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়েছে। অনেকেই এ বিষয়ে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, ঘটনাটি গতকাল ঘটেছিল, তারপরে আবার সমাধানও নাকি করা হয়েছিল। কিন্তু ওই শিক্ষক ক্লাস রুমে শিক্ষার্থীদের আবারও বকাবকি করেন। এ ঘটনায় আজ রাতে একজন শিক্ষার্থী লজ্জা মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বর্তমানে সে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয়ে ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সাড়া মেলেনি।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই এবং এ ধরণের কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: