নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনায় রাবিতে প্রতিবাদ

আসিফ আজাদ সিয়াম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় | ১৮ আগষ্ট ২০২২, ০৩:৫৩

সংগৃহীত

জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের অস্বাভাবিক লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। এসময় তারা ভোলায় পুলিশের গুলিতে নূরে আলম ও আব্দুর রাহিমের হত্যার দ্রুত বিচাররেরও দাবি জানান। বুধবার (১৭ আগষ্ট) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে তারা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাবির সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এনামুল হক বলেন, ‘সকলকে সম্মিলিত ভাবে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা করতে যে সব পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন তা নিতে হবে। আমারা উন্নয়নের জোয়াড়ে ভাসছি কিন্তু দেশে এখন এক হালি ডিমের দাম ৮৮ টাকা। আমারা এ কোন দেশে বাস করছি! জীবন যাত্রার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে অথচ সব জিনিস এর দাম বেড়েছে। সাধারণ মানুষ গাড়ি চালানো সীমিত করে দিয়েছে। কারণ তারা অনৈতিক অবৈদ্ধ ভাবে টাকা লুটপাটের দলে না। তাদের আয় সীমিত হয়েছে। আন্তজার্তিক ষড়যন্ত্রের আধিপত্যবাদ আমাদের চেপে বসেছে। বর্তমান প্রশাসন, দেশের সরকার সেটি সামাল দিতে পারছে না। আজকে শিক্ষার মান থেকে শুরু করে সব কিছু ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময় এখনই’।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সদস্য অধ্যাপক ড. হাসানাত আলী বলেন, ‘স্বাধীনতা ৫০ বছরে কোন সরকার যা করতে পারে নি তা এই সরকার করেছে। বেতন বাড়েনি, আয় বাড়েনি অথচ সকার অপ্রয়োজনীয় ব্যায় বৃদ্ধি করছে। বিভিন্ন অযুহাতে তারা সরকারি অর্থে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছে জনগণের টাকায়। আর জনগণ এদিকে না খেয়ে মরছে। চালের যে অসনীয় দাম আপনারা কি বলবেন এখন ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন? আবার একজন মন্ত্রী বলেন আমারা নাকি বেহেশতে আছি। কথা তো ঠিক ই। যারা বর্তমান সরকারের লুটপাটের অংশীদার তারা তো বেহেশতেই থাকবেন’।

তিনি আরো বলেন, কিছু দিন আগে সুইচ রাষ্ট্রদূত বলেছেন গত এক বছরে এই দেশ থেকে সুইচ ব্যাংকে জমা হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা। আর গত ২০২১ সাল পর্যন্ত জমা হয়েছে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। অনতিবিলম্বে আপনারা যে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছেন সেই টাকা গুলো এনে জাতীয় অর্থনীতিতে জমা দেন। খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় সোয়া লক্ষ টাকা। এই টাকা আদায় করার ব্যবস্থা করে জাতীয় কোষাগারে জমা দিন। তেলের দাম বৃদ্ধি করার দরকার নেই। শুধু আপনাদের দুর্নীতি, অনিয়ম, টাকা পাঁচার এবং বেগম পাড়ায় যে অর্থ লুট করে বাড়ি বানিয়েছেন সেই টাকা গুলোই যদি দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেন তাহলে এক টাকাও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়বে না। এদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরমের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আমজাদ হাসেন বলেন, ‘এই সরাকারের জনগণের প্রতি কোন দায় দায়িত্ব নাই। তারা বাকশালী কায়দায় রাম রাজত্ব করছে, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এই চোরদের কেন ধরা হচ্ছে না। এই পাচারের কারণে দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে। যা তারা জনগণের দিয়ে পূরণ করছে’।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. এফ, নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটা জাতি ধংস অনিবার্য তখনই যখন সে জাতির শিক্ষা ধংস করে দেয়া হয়। প্রাইমারি থেকে কলেজ পর্যন্ত শিক্ষা নিয়ে সব জায়গায় যারা সিদ্ধান্ত দেয়, সেখানে এক বিশেষ গোষ্ঠীরলোকদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে শিক্ষাকে ধংস করা হচ্ছে। তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার নিজে মুনাফা করছে। যদি গণতান্ত্রিক সরকার হতো তাহলে এমন টি করতে পারত না’।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুল হাসান খানের সঞ্চালনা আরো উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডীন ও ফোরমের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফজলুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পদক অধ্যাপক ড. কুদরত ই জাহান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ফোরমের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শাহেদ জামান, ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল হোসেন, অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আমিনুল হক, অধ্যাপক ড. সাবিরুজ্জামান সুজা, অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেকসহ জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: