আকিফকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি

ঢাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন এর কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা

সময় ট্রিবিউন | ২৬ মার্চ ২০২২, ০৪:৩৩

ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদক রেজোয়ান হক মুক্ত স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য আকিফ আহমেদ কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনায় যথাযত পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। সংগঠনের একজন সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের ব্যর্থতা, অপরিণামদর্শিতা ও একই সংসদ কর্তৃক ভিক্টিমের প্রতি ঘটা অপরাধের অভিযোগে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও সভায় কিছু মূল্যায়ন উত্থাপন ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

মূল্যায়নগুলো হলো :

০১. ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন অভিযুক্ত আকিফ আহমেদকে শুধু সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে, তার ছাত্রত্ব বাতিলের কোনো দাবি করেনি। এর মধ্য দিয়ে অভিযুক্তের প্রতি সুস্পষ্ট নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়েছে।

০২. সংগঠনের প্যাড, দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষর ও তারিখ ব্যবহার করে আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কেবল ফেসবুক পেজে পোস্ট করে দায় সারার চেষ্টা করা হয়েছে।

০৩. ফেসবুক পোস্টে ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে কিছু বিষয়ের অবতারণা করে ভিক্টিম ব্লেমিং এর সুযোগ করে দেওয়া হয়। এটি অপরাধকে লঘুভাবে উপস্থাপনের প্রয়াস।

০৪. ভিক্টিম ব্লেমিং এর বিষয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে প্রথম ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নিয়ে আরেকটি পোস্ট প্রদান করা হয় এবং এবারেও আনুষ্ঠানিক প্রেস রিলিজ দেওয়া হয়নি।

০৫. সর্বশেষ তৃতীয় আরেকটি পোস্টের অবতারণা করে প্রথম পোস্টে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্যের পক্ষেই যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় এবং একই সাথে ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশ পায় এমন তথ্য সরবরাহ করা হয়। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশ করা বাংলাদেশের আইনে অপরাধ ও ছাত্র ইউনিয়নের নীতি-বিরুদ্ধ একটি কাজ। এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি লেখা পর্যন্ত উক্ত ফেসবুক পোস্ট অপসারণ কিংবা ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশের জন্য কোনো প্রকার ক্ষমা প্রার্থনা করে কোনো বিবৃতি দেয়নি ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাবি সংসদ।

০৬. অভিযোগ গ্রহণের তারিখ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য প্রদান করা হয়। ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ গ্রহণের তারিখ ২০ মার্চ উল্লেখ করলেও ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক অনলাইন পত্রিকা বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া বক্তব্যে ১৪ মার্চের কথা বলা হয়। এছাড়াও অভিযোগকারী ঢাবি সংসদের বিগত কমিটির কাছে প্রথম অভিযোগ করেছে বলে উক্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়। এটি সত্য হয়ে থাকলে বিগত কমিটির নেতৃবৃন্দ ধর্ষণের মত ঘটনায় নির্লিপ্ততা প্রদর্শন করেছিল বলে বিবেচ্য হবে, যা ছাত্র ইউনিয়নের আদর্শ ও সাংগঠনিক নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন।


সভার সিদ্ধান্তগুলো হলো:

০১. পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের বর্তমান কমিটি স্থগিত থাকবে।

০২. আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক ইমেইল ও ফেসবুক পেইজ কেন্দ্রীয় সংসদ বরাবর বুঝিয়ে দিতে হবে।

০৩. ছাত্র ইউনিয়নের নিপীড়ন বিরোধী সেল এ ঘটনায় তদন্ত করবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তারা কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী বরাবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। উক্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

০৪. অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন দাবি জানাচ্ছে। অভিযোগকারী যদি কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: