‘ধর্মের নামে যারা রাজনীতি করে, তারাই গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য দায়ী’

সময় ট্রিবিউন | ৩ অক্টোবর ২০২১, ০৩:১৭

-ফাইল ছবি

লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক মানবতার শত্রুরা যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে এবং যাবতীয় অপরাধকে বৈধতা দেয় তারাই মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু দুজনই ধর্ম-বর্ণ-জাতি-ভাষা-অঞ্চল নির্বিশেষে সব মানুষের কল্যাণের জন্য বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও ধর্মের নামে কিংবা কোনও মতবাদের নামে ভিন্নমত, ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্ন জীবনধারায় বিশ্বাসী মানুষদের নির্যাতন করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ আফগানিস্তান। সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে আমরা লক্ষ্য করছি পৃথিবীতে যত বিরোধ, সংঘাত ও যুদ্ধ হয়েছে তার প্রধান কারণ ধর্ম, জাতিগত বা গোত্রগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। সভ্যতার ধারাবাহিকতায় বহু মহাপুরুষ মানবজাতিকে হিংসা, সংঘাত ও বৈষম্য থেকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন। মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর সভ্যতার সেই ধারাবাহিকতার অন্তর্গত।

মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার বিকেলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন।

ওয়েবিনারে নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা, অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনের জনক, ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরকে ২০০৭ সালে জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের প্রাক্কালে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস অসহযোগ আন্দোলনকে নতুন মাত্রা প্রদান করেছিলেন, যা বাংলাদেশে পাকিস্তানের ২৪ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনযন্ত্র সম্পূর্ণ অচল করে দিয়েছিল।

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক মানবতার শত্রুরা যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে এবং যাবতীয় অপরাধকে বৈধতা দেয় তারা দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই মহান নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল ব্যক্তি গান্ধী বা মুজিবকে হত্যা করলে তাদের মানবপ্রেমের দর্শনের আলো নিভে যাবে, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও ধর্মান্ধতা জয়ী হবে। কিছু সময়ের জন্য অন্ধকারের অপশক্তি কিছু অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে পারে বটে, তবে অন্তিমে সত্য ও মানবতারই জয় হয়। ইতিহাসের এই সত্যই মানব সভ্যতার চালিকা শক্তি।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন-মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সর্বইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সভাপতি মানবাধিকার নেতা তরুণ কান্তি চৌধুরী, নোয়াখালী গান্ধী আশ্রমের সম্পাদক সমাজকর্মী মনু গুপ্ত প্রমুখ।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: