জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত: নৌপ্রতিমন্ত্রী

সময় ট্রিবিউন | ৩০ আগষ্ট ২০২১, ০০:১০

সংগৃহীত

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হলেই তার কফিনে লাশ ছিল কিনা- তা বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বারডেম আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত হলেই কফিনের মধ্যে কী ছিল বেরিয়ে আসবে। সেদিনের সেই ঘটনায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই সময়ে যারা বেঁচেছিলেন তারা পরবর্তীতে অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সেগুলো এখন বড় প্রশ্ন। কাজেই সেটারও একটা রহস্য উদ্ঘাটন করা দরকার।

বিএনপি একটি পলিটিক্যাল ডেডবডিতে (রাজনৈতিক মৃতদেহ) পরিণত হয়ে গেছে মন্তব্য করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীর তথ্যভিত্তিক বক্তব্যকে হাস্যকর বলছেন; তার চিকিৎসা করানো দরকার। এটা দিবালোকের মতো আমরা দেখতে পাচ্ছি।

কিছু মতলববাজ সরকার ও সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধির রাজনীতিতে কিছু মতলববাজ তাদের মতলবগুলোকে বাস্তবায়ন করতে পারছেনা বলেই, সরকারের কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন, সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে সরকারের একটা দ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্য এই মতলববাজরা আজকে প্রস্তুত হয়েছে। যেন সরকারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন যেন না হয় সেজন্য সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্য মতলববাজরা মাঠে নেমেছে। তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তারা আমাদের সঙ্গেই আছে। আমাদের সঙ্গে থেকেই তারা ছুরিকাঘাত করতে চায়।

জিয়া পরিবার অপরাধী এবং খুনি পরিবার, তারা এসবের ফল ভুগছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের একটি হত্যাকাণ্ডকে জায়েয করার জন্য কত হত্যাকাণ্ড করেছে জিয়াউর রহমান। যদি সেনাবাহিনীর মধ্যেই চিন্তা করি, ১৮টি ক্যু হয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডকে জায়েয করার জন্য শত শত নয়, হাজার হাজার শুধু সেনাসদস্যকেই হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডকে জায়েয করার জন্য শুধু অপরাধীদের পুনর্বাসন করে নাই। বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে; কিন্তু তিনি (জিয়াউর রহমান) বাঁচতে পারেন নাই।

অপরাধকে ঢাকতে গিয়ে জিয়া যে অপরাধ করেছিল, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, এ পরিবারটি একটি অপরাধী ও খুনী পরিবার হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের কাছে চিহ্নিত হয়েছে। আজকে তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে অপরাধী হয়ে কারাবরণ করেছেন। তার এক সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে মানিলন্ডারিং মামলায় পলাতক থেকে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেকজন পলাতক আসামী হিসেবে বাইরে অবস্থান করছেন। কী করুণ পরিণতি হয়েছে এ পরিবারের! দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্খিত গর্বের জায়গায় পৌঁছতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশকে সেই গর্ব ও অহংকারের জায়গায় আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এখন আর দরিদ্র দেশ নই। ঋণগ্রস্ত দেশ নই। আমরা এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করতে পারি। আমরা এখন পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি। এ করোনা মহামারীতেও বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যায়নি। আমাদের কোন শিশু এখন স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা দোরগোড়ায়। গ্রামগুলো আজ বর্ণিল হয়েছে। গৃহহীনদের ঘর করে দেয়া হচ্ছে। যেই বাংলাদেশ বিশ^ব্যাংক ও আইএমএফ’র পেছনে ঘুরত ঋণের জন্য, সেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিচ্ছে। এই বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের মঞ্জুরির জন্য তদবির করতো, সেই বাংলাদেশ এখন সুদানকে মঞ্জুরির অর্থ দিচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সভাপতি অধ্যাপক মীর নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এস এ মালেক, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক মুর্তাজা কে আই কাইয়ুম চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: