শুক্রবার খুলছে বঙ্গবন্ধু টানেল

সময় ট্রিবিউন | ৬ অক্টোবর ২০২১, ০৫:০০

বঙ্গবন্ধু টানেল-ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাতে খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষে যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজ (মঙ্গলবার) একনেক সভায় চলাকালীন অবস্থায় আমরা জানতে পারলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ডিসেম্বরে খুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামী শুক্রবার খুলে দেওয়া হচ্ছে।

এমএ মান্নান আরও বলেন, এই টানেল সময়ের আগে খুলে দেওয়ার কারণে ব্যয় কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে। আগামী শুক্রবার মধ্যরাতে এর দ্বিতীয় মুখ উন্মোচন করা হবে। তবে এখনই পরিবহণ যাতায়াত করতে পারবে না। পুরোপুরি সম্পন্ন করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এই টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই পুরোদমে চলে প্রকল্পের কাজ।

কর্ণফুলী নদীর ওপর ইতোমধ্যে ৩টি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা বিদ্যমান বিপুলসংখ্যক যানবাহনের জন্য যথেষ্ট নয়। নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা একটি বড় সমস্যা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতার জন্য বড় হুমকি। এই পলি সমস্যার মোকাবেলায় কর্ণফুলী নদীর ওপর আর কোনো সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এজন্য সরকার জেলার দুই অংশকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই টানেল দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচল করবে।

টানেল সাইটে নদীর প্রস্থ ৭০০.০০ মিটার এবং পানির গভীরতা ৯-১১ মিটার। টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৪০০ মিটার। টানেলের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা চীন সরকার ব্যয় করছে। নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি সংলগ্ন এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। টানেলটি হচ্ছে দুটি টিউবে চার লেনবিশিষ্ট। এ ছাড়া টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্বসম্পন্ন এই টানেলের কারণে পাল্টে যাবে চট্টগ্রামের চেহারা। চীনের সাংহাই সিটির আদলে গড়ে উঠবে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন।’ এ ছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে। বাঁশখালীতে হচ্ছে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। মহেশখালীতে হয়েছে এলএনজি স্টেশন। আনোয়ারায় হচ্ছে বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব মেগা প্রজেক্টের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু টানেল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: