রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক আর নেই, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

সময় ট্রিবিউন | ১১ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৩১

ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক মারা গেছেন। রোববার (১১ এপ্রিল) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।

একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী মিতা হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১১ এপ্রিল) পৃথক শোক বার্তায় তারা এই শোক প্রকাশ করেন।

শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে রবীন্দ্র চর্চা এবং রবীন্দ্র সংগীতকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

রাষ্ট্রপতি মরহুমা মিতা হকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অপর এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এর আগে গত ২৫ মার্চ মিতা হকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে নিজ বাসাতেই আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ৩১ মার্চ তাকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠলে গত শুক্রবার (৯ এপ্রিল) তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালের দিকে হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। এরপর তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতে রোববার সকালে তিনি মারা যান। মিতা হক প্রায় পাঁচ বছর ধরে কিডনি রোগেও ভুগছিলেন।

মিতা হকের ১৯৬২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের সর্বোচ্চ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার এককভাবে মুক্তি পাওয়া মোট ২৪টি অ্যালবাম আছে। এর মধ্যে ১৪টি ভারত থেকে ও ১০টি বাংলাদেশ থেকে। তিনি ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

মিতা হক প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক।

মিতা হক প্রথমে তার চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলাবাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে গান শেখা শুরু করেন। ১৯৯০ সালে বিউটি কর্নার থেকে প্রকাশিত হয় মিতা হকের প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম ‘আমার মন মানে না’।

মিতা হকের ‘সুরতীর্থ’ নামে একটি গানের স্কুলও রয়েছে। একসময় ছায়ানটের রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতিও ছিলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: