অন্যের হয়ে কারাভোগ করা সেই মিনু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

সময় ট্রিবিউন | ৪ জুলাই ২০২১, ২১:৪১

ফাইল ছবি

খুনের মামলায় আসামি না হয়েও অন্যের হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করা মিনু আক্তার (৩০) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গত ১৬ জুন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান মিনু আক্তার (৩০)। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় এবার তিনি জীবন থেকেই মুক্তি পেলেন তিনি। গত ২৮ জুন রাতে নগরের বায়েজিদ সংযোগ সড়কে তিনি নিহত হলেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্ত শেষে তাকে দাফন করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ২৮ জুন দিনগত রাতে বায়েজিদ লিংক রোডে গাড়ির ধাক্কায় এক নারী মারা যান। তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে ২৯ জুন আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে তার দাফন করা হয়। ওই নারীর পরিচয় বের করতে আমরা কাজ করছিলাম। শনিবার বিকেলের দিকে পুলিশের একটি টিম সীতাকুণ্ড এলাকায় কয়েকজনকে ওই নারীর ছবি দেখালে তারা মিনুর ভাইয়ের কথা বলেন। পরে মিনুর ভাই ছবিটি দেখে এটি তার বোন বলে শনাক্ত করেন।

মিনুর বড় ভাই মো. রুবেল বলেন, ‘আমার বোনকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। তাকে যারা জেলে পাঠিয়েছিলেন, তারা এই ঘটনায় জড়িত কি না, তার তদন্ত হওয়া উচিত। আমার বোনের সন্তানদের এখন কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’

ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয়ের ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ট্রাকচালককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জে একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টকর্মী কোহিনূর আক্তারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পারভীন আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টকর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।

মামলায় পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে পারভিনকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দিলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। এর মধ্যে এক বছর তিন মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান কুলসুম।

মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ওই হত্যা মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই সাজার পরোয়ানামূলে ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলি হয়ে মিনু কারাগারে যান।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: