বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

সময় ট্রিবিউন | ২৬ জুন ২০২১, ০১:৪৪

ছবি: সংগৃহীত

‘মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবেন, রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পড়ে থাকবেন, পাশ দিয়ে যাওয়া কেউ ফিরে তাকাবে না, সবশেষে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যাবে- এমন উন্নয়ন ও সমাজ আমরা চাই না’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র রচনা করতে চাই, যেটি বস্তুগত উন্নয়নের দিক দিয়ে একটা উন্নত রাষ্ট্র হবে, একই সঙ্গে একটি মানবিক রাষ্ট্রও গঠন হবে। যেখানে কেউ মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না। রাস্তার পাশে কেউ সাহায্যের আশায় পড়ে থাকবে না।

শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট কনফারেন্স-২০২১-এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কনফারেন্সের আহ্বায়ক মো. তৈয়বের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি হিসেবে পিডিজি কেএম জয়নুল আবেদীন, জেলা গভর্নর ড. বেলাল উদ্দিন আহমেদ ও রোটারিয়ান ফাতেমা জেবুন্নেছা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নয়ন কখনও টেকসই হয় না। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন। সেটি করতে হলে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটাতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে। ক্রমাগতভাবে পরিবেশ ধ্বংসের কারণে পৃথিবীকে আমাদের জন্য বৈরী করে তুলছি। এজন্য পরিবেশ সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষাটাকে আমরা অনেকটা পণ্য বানিয়ে ফেলেছি, যেটি আজ থেকে ৩০ বছর আগে এরকম পণ্য ছিল না। শিক্ষাকে পণ্য বানানোর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। শিক্ষাকে শুধুমাত্র পাঠদান এবং ডিগ্রি প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নতুন প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর মানুষ অনেক উন্নতি করেছে। কিন্তু পৃথিবীতে আজ প্রচণ্ড হানাহানি অশান্তি। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করোনা মহামারির মধ্যেও পৃথিবীতে শরণার্থীর সংখ্যা কয়েক কোটি বেড়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে দেখছি মানুষ একটি অদৃশ্য জীবাণুর কাছে কত অসহায়। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর দেশটিও অসহায়, পাশাপাশি পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশটিও অসহায়।

হাছান মাহমুদ বলেন, সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন হওয়ার পরও ঝড়, বন্যা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যা পৃথিবীকে অবাক করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম। অথচ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম। এটি সম্ভবপর হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা এবং আমাদের কৃষকসহ বিপুল জনগোষ্ঠীর পরিশ্রমের কারণে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: