টয়লেটের পর সাবান ব্যবহার করেনা প্রজেক্ট হিলসার বাবুর্চিরা

সময় ট্রিবিউন | ১৮ জুন ২০২১, ০৭:০০

ছবিঃ সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বদৌলতে অল্পদিনেই পরিচিতি পেয়েছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটের অদূরে ইলিশ মাছের আদলে নির্মিত ‘প্রজেক্ট হিলসা’ নামক দেশের অন্যতম বড় রেস্তোরাঁটি। স্থাপনা নকশার কারণে রেস্টুরেন্টটি আলোচনায় থাকলে সমালোচনা-অভিযোগও কমতি নেই। খাবারের মানে ক্রেতাদের অভিযোগ, সেইসঙ্গে বেশি সার্ভিস চার্জ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ। এবার রেস্টুরেন্টটিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানেও উঠে এলো গুরুতর অনিয়মের চিত্র।

বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে প্রজেক্ট হিলসায় অভিযান চালায় মুন্সীগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ সাংবাদিকদের জানান, এখানে প্রায় ১০০ কর্মচারী রয়েছেন। তারা রান্নাঘরে ব্যবহারের স্যান্ডেল পরেই টয়লেটে যান। আবার সেই স্যান্ডেল রান্নাঘরে ব্যবহার করেন। তাদের টয়লেটের জন্য আলাদা কোনো স্যান্ডেল নেই। এটা খুবই অস্বাস্থ্যকর। সাধারণত মানুষ ঘরেও আলাদা আলাদা স্যান্ডেল ব্যবহার করে। কিন্তু এখানে চিত্রটি সর্ম্পূণই ভিন্ন। এছাড়াও রেস্তোরাঁটিতে অতিথিদের টয়লেটে সাবানের ব্যবস্থা থাকলেও বাবুর্চি ও স্টাফদের টয়লেটে কোন সাবান পাওয়া যায়নি। টয়লেটের পর বাবুর্চিরা সাবান ব্যবহার করছিলেন না। শুধু পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করছিলেন। কিচেন পরিষ্কার থাকলেও ফ্রিজের মাছ মাংস র সঙ্গে রান্না করা খাবার মজুদ রাখা হয়েছিল। এছাড়াও রেস্তোরাঁটি তে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন বিপুল পরিমাণের সস ও নুডলস পাওয়া গেছে। এইসব পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিএসটিআই এর অনুমোদন লাগবে।

এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে তাদেরকে কোনো জরিমানা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকারের এই কর্মকর্তা বলেন, আমারা মূলত ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ সম্পর্কে অবহিত করা ও কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে সেই নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে গিয়েছি। এ ঘটনায় প্রথমবারের মতো তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধন হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একই অপরাধ আবার করলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খাবারের মূল্য অতিরিক্ত রাখার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ আল আজাদ বলেন, খাবারের মূল্য নির্ধারণ করবে যারা খাবার তৈরি করবে। সেখানে যদি মূল্য তালিকা লাগানো থাকে, সেক্ষেত্রে ক্রেতা দেখে খাবার কিনতে পারেন। এক প্লেট ভাতের দাম বা মাছের দাম কত তা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে, সরকার করে দেয় না। এটা মেনু তালিকায় লিখে রাখতে হবে অথবা মূল্য তালিকায় লিখে রাখতে হবে। তবে এর থেকে বেশি দাম নেওয়া যাবে না। ভোক্তারা মেনু কার্ড দেখে খাবার খাবেন। ভোক্তার কাছে যদি মনে হয় দাম বেশি, তাহলে ওই ভোক্তা ওই রেঁস্তোরায় খাবার নাও খেতে পারেন। এটা ভোক্তার স্বাধীনতা। যদি মূল্য তালিকা না থাকে তাহলে তারা অপরাধ করেছে বলে গণ্য হবে।

প্রজেক্ট হিলসার আরও অনেক ক্রটি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তাদের এসব ক্রটি-বিচ্যুতি সংশোধন করতে বলেছি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: