কে এই সাংবাদিক রোজিনা?

সময় ট্রিবিউন | ২১ মে ২০২১, ০৪:৫৪

ছবিঃ সংগৃহীত

সরকারি নথি চুরির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে বর্তমানে চলছে যতো আলোচনা-সমালোচনা। আর এ কারণে জনসাধারণের রোজিনা ইসলামের আদ্যোপান্ত জানা জরুরি।

রোজিনা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৯৯৫ ব্যাচের ছাত্রী। প্রথমাবস্থায় দৈনিক সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়। সংবাদমাধ্যমে কাজ করার সুবাদে সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। যিনি পরে তাকে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। অতঃপর প্রথম আলোতে যোগ দেন রোজিনা ইসলাম।

এছাড়া সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর সাথে ছিলো তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। রোজিনা-টুকুর ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা অপর সাংবাদিক অরুণ কুমার কর্মকার জেনে গেলে ষড়যন্ত্র করে তাকে প্রথম আলো থেকে চাকরীচ্যুত করান রোজিনা। একই কারণে শ্যামল সরকার ও শিশির মোড়ল ইত্তেফাক থেকে চাকরি হারিয়েছেন।

রোজিনা ইসলাম এরপর সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তৎকালীন বিএনপির গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী আবদুল মান্নানের সঙ্গে। যার রেশ ধরে রোজিনা বিএনপি আমলে আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনৈতিক মামলার ওকালতি করেন। যার মাধ্যমে পরবর্তীতে তিনি প্রিমিও গাড়ির মালিক হন।

শুধুমাত্র বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্র ও সংগঠনকে বাংলাদেশের দেয়া মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননা/ক্রেস্টের স্বর্ণের ১২ আনাই মিছে বলে আখ্যায়িত করে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেন।

এছাড়াও ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম আলোর প্রতিনিধি হিসেবে নিউইয়র্ক সফরকালে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ভারতীয় এক সাংবাদিক লেখা চুরির অভিযোগ করেন। সেই নারী সাংবাদিক দাবি করেন রোজিনা ইসলাম তার লেখা দাঁড়ি কমা সহ হুবহু নকল করে উপস্থাপন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে রোজিনা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেন এবং শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সেই সাংবাদিকের সাথে সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হন।

সাংবাদিকতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গোপন নথি রোজিনা ইসলাম বিভিন্ন দেশের কাছে টাকার বিনিময়ে পাচার করে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সদ্য সাবেক স্বাস্থ্য সচিবের কাছ থেকে অনেকটাই প্রভাব খাটিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে রোজিনা ইসলাম তার স্বামীর প্রতিষ্ঠানের নামে তিনটি কাজ নিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ঔষধ কোম্পানীকে প্রায় শত কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিবকে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন। স্বাস্থ্যসচিব যথাযথ সাড়া না দেওয়ায় রোজিনা ক্ষুব্ধ হন।

এভাবে সাংবাদিকতার ব্যানার কাজে লাগিয়ে ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেও ঢাকার খিলগাঁও ও ধানমন্ডি ১৫ তে দুটি ৭ তলা বাড়ি ও বনানীতে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট এর মালিক তিনি। এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী আবদুল মান্নানের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে রোজিনা নিজের এবং তার স্বামীর নামে রাজউকের কাছ থেকে পূর্বাচলে একটি ৫ কাঠার প্লট এবং অন্যান্য স্থানে দুটি প্লট পেয়েছিলেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: