কুসিক নির্বাচন: নগর পিতা হলেন আরফানুল হক রিফাত

সময় ট্রিবিউন | ১৬ জুন ২০২২, ১১:৪২

মেয়র পদে নির্বাচিত ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের সঙ্গে আরফানুল হক। বুধবার রাতে নগরের রানীর দিঘীরপাড় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হককে (রিফাত) বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফল অনুযায়ী, নৌকা মার্কার প্রার্থী আরফানুল হক পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক (সাক্কু) পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট।

নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হকের (সাক্কু) চেয়ে ৩৪৩ ভোট বেশি পেয়েছেন তিনি।

কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন, সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর মেয়রও হন; চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে ভোটের লড়াইয়ে নেমে আগে কখনও হারেননি মনিরুল হক সাক্কু; তাকে সেই স্বাদ দিলেন আরফানুল হক রিফাত। আর রিফাতের এই জয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এই প্রথম পেল আওয়ামী লীগের মেয়র।

আগের দুটি নির্বাচনে বড় ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে আসা সাক্কু স্বল্প ব্যবধানে এই হারকে মেনে নিতে নারাজ। তিনি অভিযোগ করেছেন, কারচুপি করে তাকে হারানো হয়েছে।

তবে নিজের এই জয়কে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে’ জনরায় হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রিফাত। তার রাজনৈতিক গুরু হিসেবে পরিচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারও বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে কুমিল্লাবাসী।

রিফাতের রাজনীতির হাতেখড়ি ছাত্রলীগের মাধ্যমে। ১৯৭৪ সালে তিনি কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি এবং স্নাতক ডিগ্রি নেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রতিবাদ করতে গিয়ে একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন রিফাত। তখন পালিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিদেশে। পরে দেশে ফিরে ১৯৮০ সালে কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতি হন।

১৯৮১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে বহিঃক্রীড়া ও ব্যায়ামাগার সম্পাদক নির্বাচিত হন রিফাত। একই বছরে জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকার হন তিনি। তার দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়।

১৯৮৩-৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। দেশে ফিরে সক্রিয় হন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে।

১৯৯৬ সালে রিফাত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি কুমিল্লা জেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। মহানগর সভাপতির দায়িত্বেই রয়েছেন এমপি বাহার।

চার দশকের বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও রিফাতের ভোটের মাঠে আসা এবারই প্রথম, আর প্রথম বারেই করলেন বাজিমাত।

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: