২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচারের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন

ঢাবি প্রতিনিধি | ২৬ মার্চ ২০২২, ০৪:৪৫

ছবিঃ সংগৃহীত

২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও একাত্তরে গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচারের দাবিতে আজ ২৫ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শাহীন সিকদার।

আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. এইউজেড প্রিন্স, সহ-সভাপতি নুর আলম সরদার, কামরুজ্জামান রাজু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শুভ্র মাহমুদসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, "আজ ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অন্যায়ভাবে নিরীহ বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নৃশংস গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালিয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত ৩০ লক্ষ বাঙালিকে গণহত্যা ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হানি করার অপরাধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোন বিচার হয়নি যা কখনোই মেনে নিবে না বাংলাদেশের জনগণ। জাতিসংঘের নিকট দাবি, অবিলম্বে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। একাত্তরে নৃশংস গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।"

সভাপতির বক্তব্যে শাহীন সিকদার বলেন, "বাঙালির ইতিহাসের কালরাত ভয়াল ২৫ মার্চ। নিরীহ বাঙালির ওপর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো বর্বর গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিজড়িত ইতিহাসের এক অধ্যায়। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা আমরা কখনোই ভুলবো না।"

বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, "স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য অপারেশন সার্চলাইট নামক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। অভিযান শুরু করার পূর্বে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।বাঙালিদের ওপর আক্রমণের পর গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।"

ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন,
"২৫ মার্চের বর্বরতাকে স্মরণ তথা প্রকৃতার্থে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি জাতির চিরন্তন শ্রদ্ধার স্মারক এবং সাক্ষ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। অবিলম্বে ২৫ মার্চকে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, "জাতিসংঘের প্রতি আহবান, একাত্তরে নৃশংস গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে আরোও জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য খুব শীঘ্রই জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: