ডিবি হেফাজতে আসামির মৃত্যু, পরিবারের দাবি নির্যাতন করে হত্যা

সময় ট্রিবিউন | ১ মে ২০২১, ২২:৪১

ফরিদপুরে ডিবি পুলিশের হেফাজতে আসামি আবুল হোসেন মোল্লার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা তাঁর বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন-ছবি সংগৃহীত

ফরিদপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন মোল্লা (৪৮)। তাঁর বাড়ি সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামে। তিনি বিবাহিত এবং দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।

আবুল হোসেনের পরিবারের দাবি পুলিশ হেফাজতে আবুল হোসেন মোল্লাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।

শনিবার সকাল ছয়টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল ওই আসামিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি)।

আবুল হোসেনকে গত ৫ এপ্রিল রাতে সালথায় সংঘটিত সহিংস ঘটনার জন্য ১৬ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ওই ঘটনায় পুলিশের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। তদন্তে তাঁর নাম আসায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, ২৮ এপ্রিল পাঁচ দিনের রিমান্ডে আবুল হোসেনকে জেলা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কুমার কর্মকার বলেন, আবুল হোসেনের রিমান্ড চলছিল। সকালে তিনি সাহ্‌রি করেছেন। শনিবার ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে তিনি শৌচাগারে যান। অনেকক্ষণ ধরে তাঁর কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় নিরাপত্তারক্ষী দরজা খুলে দেখেন, তিনি মেঝেতে পড়ে আছেন। তাঁকে দ্রুত ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৮) বলেন, আমার বাবা কোনো অপরাধ করেননি। আমার বাবারে রিমান্ডে নিয়া মাইরা ফেলান হইছে। আমার বাবা নিরীহ মানুষ ছিলেন। তিনি কোনো দল-পক্ষে থাকেন না। তিনি গরুর খামার নিয়ে থাকতেন। মেয়ে তাঁর বাবা হত্যার বিচার চান।

সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. খায়রুজ্জামান বলেন, আবুল হোসেন নিরীহ ধরনের মানুষ ছিলেন। তাঁর একটি গরুর খামার আছে। তিনি ওই খামার নিয়েই থাকতেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন।

ফরিদপুরের এসপি মো. আলিমুজ্জামানের ভাষ্য, ‘আবুল হোসেন মোল্লা স্ট্রোক করে বা অন্য কোনো কারণে মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত করাসহ যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) জামাল পাশাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: