রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম 'সারমাত' মোতায়েন এ বছরেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৫৪

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত এই বছরের শরৎকালেই মোতায়েন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। সম্প্রতি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সারমাতের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া।

রোসকসমস স্পেস এজেন্সির প্রধান দিমিত্রি রোগজিন জানান, তারা বুধবার সারমাত নামের পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালান। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ক্ষেপণাস্ত্রকে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতয়েত করার আগে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন।

সারমাত প্রায় ১০ টন ওজনের পরমাণু 'ওয়ারহেড' বহন করতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটির নিজের ওজন দুইশ টন। এটি চলার পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম তাই এটিকে কোন ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা কঠিন। রোসকসমস স্পেস এজেন্সি বলছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র হাজার হাজার মাইল দূর থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপে আঘাত হানতে সক্ষম।

জানা যায়, ২০০০ সাল থেকে চলছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরির কাজ। বেশ কয়েকবার এর উৎক্ষেপণ পেছানোর পর এমন সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালান হলো যখন ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।

দিমিত্রি রোগজিন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র মস্কো থেকে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পূর্বে সাইবেরিয়ার ক্রাসনোয়ারস্ক অঞ্চলে একটি ইউনিটের সঙ্গে মোতায়েন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সোভিয়েত যুগের ভয়েভোদা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিস্থাপনের মতো একই জায়গাতে এবং একই সাইলোতে স্থাপন করা হবে। এর ফলে ‘সম্পদ এবং সময়’ বাঁচাবে বলে জানান তিনি।

রোগজিন আরও বলেন, এই ‘সুপার-অস্ত্র’ পরীক্ষা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ এটা পরবর্তী ৩০/৪০ বছরের জন্য রাশিয়ানদের পরবর্তী প্রজন্মেরও নিরাপত্তা ও শক্তিমত্তার নিশ্চয়তা দেবে।

ওই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর পুতিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাশিয়াকে যারা হুমকি দেয় এখন থেকে সেই শত্রুদের দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সারমাত বিশ্বের যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রের সমকক্ষ আর একটিও এখন পৃথিবীতে নেই এবং সামনের বহু বছরেও তা হবে না। এই ক্ষেপণাস্ত্র আসলেই একটি অদ্বিতীয় অস্ত্র। এটা রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতা অনেক শক্তিশালী করবে। যারা ক্ষিপ্তভাবে উগ্র ও আগ্রাসী কথাবার্তা বলে রাশিয়াকে হুমকি দেবার চেষ্টা করছে তাদের এখন থেকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে।

এটির নামকরণ করা হয়েছে প্রাচীন কালে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং কাজাখস্তান অঞ্চলে বাস করা সারমাতিয়ান নামে একটি যাযাবর গোত্রের নামে।

২০০০ সাল থেকে দফায় দফায় এর নকশা ও কৌশলও পরিবর্তন করা হয়। এটা তৈরির খরচও বেড়েছে অনেকবার। ২০১৪ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন সারমাত দক্ষিণ থেকে উত্তর মেরু উড়ে যেতে সক্ষম।

২০১৫ সালে এটি তৈরির কাজ শেষ হয় তবে এটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ বারবার পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এর একটি 'প্রোটোটাইপ' উৎক্ষেপণ করা হয়েছিলঠে


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: