১৪ ছাত্রের চুল কর্তন: ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ভবনে তালা

সময় ট্রিবিউন | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:১৯

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবনসহ সব প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা-ছবি সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় সব ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সকালে শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দেন।

এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দুপুরে সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ দুই দফা দাবিসংবলিত একটি লিখিত স্মারকলিপি নিয়ে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শাহজাদপুর পৌর শহরের কান্দাড়া এলাকায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয়ে যান। সেখানে তাদের জানানো হয়, সিনেটে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, গত রোববার দুপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। হলে ঢোকার সময় ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেন ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস। পরে এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে চুল কেটে দেওয়ায় অপমান সহ্য করতে না পেরে মর্মাহত নাজমুল হাসান (২৫) নামের এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন, ২৪ ঘণ্টা না গেলে তাঁকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকায়।

এসব বিষয় অস্বীকার করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, কয়েক দিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোনো ছাত্র দেয়নি।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল লতিফ বলেন, আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উল্লিখিত ঘটনার সুন্দর সমাধানে আশাবাদী। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরে বিস্তারিত বিষয় জানাতে পারব।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: