শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ তবুও অতিরিক্ত ফি আদায় করছে ইউল্যাব

সময় ট্রিবিউন | ১০ আগষ্ট ২০২১, ০২:৩৭

ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ-ফাইল ছবি

করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অভিভুক্ত ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ (ইউল্যাব) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা সফর, স্কাউট, খেলাধুলা, শিক্ষা সমাপনী, আইডি-কার্ডসহ ২৫টি আনুষঙ্গিক বিষয়ে ৩ হাজার ৬৮০ টাকা ফি আদায় করছে কর্তৃপক্ষ; যা বিগত বছরগুলোতে (করোনার আগে) প্রযোজ্য ছিল।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মাঝেও অকার্যকর এসব খাতের অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয় নিয়ে। এদিকে জোরপূর্বক এসব খাতের অতিরিক্ত ফি বাধ্যতামূলক করায় অনিশ্চয়তা ও মানসিক ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা।

অবিভাবকের দাবি, করোনাকালে যেখানে মানুষের আয়-রোজগার বন্ধ, সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া অতিরিক্ত ফিসহ ১০-১২ হাজার টাকা পরিশোধ করা অমানবিক সিদ্ধান্ত।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের অনেক শিক্ষার্থী টাকা দিতে না পারায় দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তিও হতে পারেনি। এদিকে আগামী ১২ তারিখ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার ফরমফিলাপ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যেসব শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তিই হতে পারেনি তাদের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, করোনার কারণে গত দেড় বছর ধরে আমাদের কলেজ বন্ধ আছে। সেখানে আমাদের ১৫ মাসের টিউশন ফি মওকুফ না করে ৬ হাজার ৬০০ টাকা পরিশোধের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তাঁরা জানান, কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষা সফর, স্কাউট, খেলাধুলা, শিক্ষা সমাপনীসহ ২৫ টি আনুষঙ্গিক বিষয়ে ৩ হাজার ৬৮০ টাকা ফি ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আনুষঙ্গিক টাকা মওকুফের জন্য অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেছিলেন কিন্তু অধ্যক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর কিছুই করার নেই; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটি আদায় করে বাধ্য কলেজ প্রশাসন।

এ বিষয়ে এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, যেখানে আমরা বাসা ভাড়া দিতে পারছি না, তিন বেলা খেতে কষ্ট হয় সেখানে এই অতিরিক্ত ফি আমরা কিভাবে পরিশোধ করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের এভাবে জিম্মি করে এসব অকার্যকর ফি আদায় করা অন্যায়।

এসময় তিনি এসব অকার্যকর খাতের ফি আদায় মওকুফের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর আশু দৃষ্টি কামনা করেন।

ওই অভিভাবক বলেন, শিক্ষামন্ত্রী অতিরিক্ত ফি না নেয়ার জন্য স্কুল কলেজগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে ইউল্যাব বন্ধ থাকার পরেপ তারা শিক্ষা সফর, শিক্ষা সমাপনীর নামে এসব ফি আদায় না করলেও পারতো।

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিনা বানু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের ব্যবহৃত নম্বরে ফোন দিলে তাঁরা কেউই ফোন রিসিভ করেননি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: