পাঁচ দফা দাবি নিয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমাবেশ

সময় ট্রিবিউন | ১৩ জুন ২০২১, ০৪:১০

ছবি : সময় ট্রিবিউন

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫% কর বাতিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের অবৈধ আয় বাজেয়াপ্ত ও টিউশন ফি নির্ধারণে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন, করোনাকালে বেতন ফি মওকুফ, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ছাত্র সমাবেশ করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

আজ বিকাল ৪.৩০ মিনিটের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ করেন তারা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মন তমা।

এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স প্রমুখ।

সমাবেশ শেষ করে রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি রোকয়া হলের গেইট প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ হয়ে টিএসসি এসে শেষ হয়৷

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মাসুদ রানা বলেন, করোনার সময়ে আমরা মনে করেছি এবারের বাজেট সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থী বান্ধব হবে। কিন্তু করোনারা অজুহাত দিয়ে বারবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি পিছিয়ে দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও গরীব মারার বাজেট ঘোষণ করা হয়েছে। আমরা এ বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি। এ বাজেটে কৃষি,শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতকে উপেক্ষা করে ব্যবসাবান্ধব বাজেটে পরিণত করা হয়েছে।

একটি পত্রিকার সংবাদের বিবরণ দিয়ে মাসুদ রানা বলেন, এক শিক্ষার্থীর অনলাইন ক্লাস করার জন্য মা গরু বিক্রি করে মোবাইল কিনে দিয়েছে।কিন্তু এখন তো আর অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। সে মোবাইল দিয়ে এখন অনলাইন গেম খেলছে। যা আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।

তিনি আরো বলেন, গবেষণায় দেখা যাচ্ছে প্রাথমিকের ১৯% আর মাধ্যমিকের ২৫% শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা জীবন থেকে ছিটকে পড়েছে। এজন্য বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রালয়ের সিদ্ধান্ত কে দায়ী করেন মাসুদ রানা।

অবৈধ টাকাকে বৈধ এবং শিক্ষাখাত কে ধ্বংস করার জন্য এ বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। অবিলম্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত ১৫% কর বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান করেন তিনি।

সমাবেশে ফয়েজ উল্লাহ বলেন, বারবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ পিছিয়ে দিয়ে শিক্ষা খাতকে ধ্বংস করার পায়তারা শুরু করছে এ সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা না করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উপর ১৫% কর আরোপ করেছে। যা মুনাফালোভী মালিকরা বিভিন্ন ফি'র নামে শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করে নিবে।

মুনাফালোভী মালিকদের মুনাফা কে বৈধতা দেওয়ার জন্য এ কর আরোপ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফয়েজ উল্লাহ।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোালা থাকলে শিক্ষার্থীরা সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলবে তাই শিক্ষার্থীদের মুখকে বন্ধ করার পায়তারা করছে এ সরকার।

অবিলম্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত ১৫% কর প্রত্যাহার, সকল শিক্ষার্থীদের কে ভ্যাকসিনের আওতায় এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এবং করোনাকালের টিউশন ফি মওকুফ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আহবান জানান এ ছাত্রনেতা।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (একাংশ)সভাপতি আল কাদেরী,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল,সমজাতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সহ প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: