কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বলছি.. 

নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ জুলাই ২০২২, ০৩:০৪

সংগৃহীত

আপনি হয়তো জানেন বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সিস্টেম, সহজ.কম দ্বারা টিকেট কাটতে গিয়ে দেশের প্রায় লাখ লাখ মানুষ এই ঈদে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে আমিও একজন। খোজ নিলে আপনার চারপাশে এমন অনেককে পাবেন। 

গত ১৩ই জুন আমি রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা - রাজশাহীর সীট বুক করার চেষ্টা করি। কিন্ত বিকাশ থেকে ভেরিকেশন কোড দিয়ে আমার পিন কোড ছাড়াই আমার টাকা কেটে নেয়া হয় কিন্ত কোনো সীট দেয়নি, আর কোনো ডকুমেন্টসও দেয়নি যে,কেন নিলো.? ঐদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলওয়ের সার্ভার রুমে অভিযোগ জানালে তারা বলে সিস্টেম ফল করেছে। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার আসবেন। কিন্ত ঐ সময় আমারই চোখের সামনে আমারই বুক করা সীট পাশে বসা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার সীট ১২০০ টাকায় বিক্রি করে। চোখের সামনে নির্ভয়ে রাক্ষসের মত গিলে ফেললো। কিছু বলতে পারিনি সেদিন। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছি ১৪ই জুন ১ বার, ১৫ তারিখে ১ বার। কিন্ত আজ ৭ জুলাই এখনো শুনানির ডাক আসেনি। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের মাধ্যমে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম আমি একা নই আরো শত শত মানুষ এই সমস্যার ভুক্তভোগী। ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ এর কোনো রেস্পন্স না পাওয়ায় অনেকে পরামর্শ দিলেন হাইকোর্টে রিট করতে। কিন্ত কয়েকজন আইনজীবীর মত অনুযায়ী এত বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রিট পরিচালনার খরচ চালাতে আমার বাপ-দাদার ভিটেমাটি বিক্রি করলেও জেতা সম্ভব নয়। 

কিন্ত আমি এই সমস্যার শেষ দেখতে চাই। আল্লাহই ভরসা, দৃঢ়চিত্তে বলছি সমাধান করেই তবে বাড়ি ফিরবো। যেহেতু আমার একার পক্ষে দুঃসাধ্য। তাই আমি নিরুপায় হয়ে জনগণের দ্বারে এসেছি। 

কমলাপুর রেলস্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে সহজ.কম দ্বারা যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবিতে গণস্বাক্ষর ও অবস্থান কর্মসূচী করছি। 

 

আমার দাবিগুলোঃ 

১. সহজ.কম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে অথবা সহজকে বয়কট করতে হবে 

২. টিকেট সিন্ডিকেট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে

৩. টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে

৪. ট্রেনের জনসাধারণের জানমালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

৫.ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে

৬. ট্রেনের সীট সংখ্যা বাড়ানো অথবা ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

তার সঙ্গে সঠিক সেবার মান ও তথ্যের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে।

অনেকেই বলেছেন এটা খুবই রিস্কি যায়গা। প্রাণসংশয়ের সম্ভাবনা প্রবল। তবে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্টেটমেন্ট, '' দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টোলারেন্স'' অনুযায়ী বুক ভরা সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। 

আমি রিস্ক নিতে প্রস্তত এবং আমি কমলাপুর রেলস্টেশনে একা অবস্থান করছি।আপনারাও আপনাদের অবস্থান থেকে কথা বলুন। এই সমস্যা সমাধানে সবাই এগিয়ে আসুন। সবাই মিলে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করবোই ইনশাআল্লাহ। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: