আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের হয়রানি যেন নিত্যদিনের বিষয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫০

ছবিঃ সংগৃহীত
জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনে (কাস্টমস) সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি যেন নিত্যদিনের বিষয়। লাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে সাধারণ যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশির নামে তাঁদের নানাভাবে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যারা সমঝোতা করে তারা এসব ঝামেলা থেকে ছাড় পেয়ে যান। এর সুবিধা ভোগ করে লাগেজ পার্টি নামের অবৈধ ব্যবসায়ীচক্র।

স্থলবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে সমঝোতার মাধ্যমে লাগেজ পার্টির সদস্যরা লাখ লাখ টাকার বিদেশি পণ্য দেশে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঈদ সামনে রেখে ওই পার্টি প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার শাড়ি, থ্রিপিসসহ নানা ধরনের পোশাক ও কসমেটিকস নিয়ে আসে। গত ১৬ মার্চ কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পিটিয়ে লাগেজ পার্টির সদস্যরা তাদের পণ্য নিয়ে যান। তল্লাশি করার সময় জোর করে চলে গেলে তাদের ধাওয়া করেন কাস্টসমের লোকজন।

কিছু দূর গিয়ে তাদের আটক করা হলে মারধরের শিকার হন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ হৃদয় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। মূলত সমঝোতা না করেই চলে যেতে থাকায় ওই লাগেজ পার্টির পণ্য যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত দুই সপ্তাহে একাধিকবার আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, লাগেজ পার্টির চক্র এখনো সক্রিয়।

বিশেষ করে ঈদকে সামনে রাখে চক্রটি ভারত থেকে পণ্য আনে। ভারতের আগরতলা থেকে আসা মিঠু অভিযোগ করেন, গত ১৯ মার্চ পরিচিতজনের ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে কাজে লাগাতে একেকটি এক রুপি মূল্যে এক হাজার কাগজের থালা নিয়ে আসেন। এগুলোর জন্য আমদানি কর দিতে হবে উল্লেখ করে তাঁকে প্রথমে নাস্তানাবুদ করা হয়। এরপর চা-নাশতার কথা বলে ১০০ টাকা চেয়ে নেওয়া হয়।

ভারতের আগরতলার সঞ্জিত সাহা, তার বোন ঐশি সাহা ও আরেক আত্মীয় বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

এ সময় তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি করে বৈধভাবে আনা মদের বোতল পাওয়া যায়। এটি নিতে হলে তাদের কাছে এক হাজার টাকা দাবি করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়।

ভুক্তভোগী ঐশি সাহা বলেন, ‘আমি বলেছি আমার বয়স ১৮ বছর পার হয়েছে। মদ খেতে হলে বাসায় খাব। আপনাদের সামনে কেন খেতে হবে। এরপর তারা নতুন কাপড় কী কী আছে জানতে চান। আমি বলেছি বেড়াতে এলে নতুন কাপড় আনা যাবে না এমন কোনো নিয়ম আছে নাকি!’ ভুক্তভোগী যাত্রী সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘আমার বোনকে জোর করে মদ খাইয়ে দিতে চান। আমাকেও খেতে বলেন। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘ঘটনাটা মূলত ভুল-বোঝাবুঝি ছিল। যাত্রীরা খারাপ আচরণ করেছে। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হলে সিপাহী রুবেলকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অনেক সময় যাত্রীরা ব্যাগেজের যে নিয়ম আছে সেটি মানতে চায় না। এ ক্ষেত্রে তাদের নির্ধারিত নিয়ম মেনে সরকারি কোষাগারে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এটি বলার কারণে ১৬ মার্চ হামলার ঘটনা ঘটে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: