সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মৃত্যুদণ্ড চাইলেন তাঁতী লীগ নেত্রী

আশিকুর রহমান, নরসিংদী প্রতিনিধি | ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১১:৪০

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মৃত্যুদণ্ড চাইলেন তাঁতী লীগ নেত্রী

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বাংলাদেশ তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহনাজ প্রধান। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি তার মৃত্যুদণ্ড চান বলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। নরসিংদী-গাজীপুর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ তাঁতী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলীর মেয়ে। নরসিংদী-গাজীপুর সংরক্ষিত নারী আসনে একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেন।

এবারই প্রথম নরসিংদী থেকে দুইজন নারী প্রার্থীকে দল থেকে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ দুইজন হলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফরিদা ইয়াসমিন ও জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদা সিদ্দিকী রোজী। ওই মনোনয়ন দৌড় প্রতিযোগিতায় শাহনাজ প্রধানও একজন প্রতিযোগি ছিলেন। সেই দৌড় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এমন কথা পোস্ট করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন, প্রাণের নেত্রী আপনি আমাকে মৃত্যুদন্ড দিন। আপনার কাছে আকুল আবেদন আপনার কাছ থেকে অবহেলা পাওয়ার চেয়ে মৃত্যুদন্ড দিলে আমি হাসি মুখে বরণ করবো কারণ আপনি আমার প্রিয় মানুষ,আপনার কাছ থেকে অবহেলা পাওয়ার চেয়ে মৃত্যু হলো বেশী আনন্দের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দয়া করুণ আমার প্রতি,আমায় মৃত্যুদন্ড দিয়ে আমায় এ কষ্ট থেকে মুক্ত করুণ।

মাসুদা সিদ্দীক রোজী যার রাজনীতি শুরু হয়েছে আমার বাবা আর খগেন্দ্র কাকুর কমিটি ২০১৭ সালে তাঁতী লীগের মাধ্যমে।
যদিও তাঁতী লীগে আমার বাবার মাধ্যমে তিনি আসেননি। এর আগে তিনি কোনোদিন রাজনীতি করেননি এবং তিনার পিতার পরিবার বি এনপি এবং তিনি হাইব্রিড।তাঁতী লীগের পদ পাওয়ার পর থেকে উনার একের পর এক পদ আর পদ! যার রাজনীতি শুরু হয়েছে ১৭ সালে এবং যার রক্তে আওয়ামীগ নেই সে আজ এমপি। যদিও উনার স্বামী আওয়ামীগের সাথে জড়িত ছিলেন। আর আমার পিতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৯১ সাল থেকে বার বার এমপি মনোনয়ন চেয়ে পাননি।
৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামীলীগের যত খরচ আমার পিতা সিংহ ভাগ বহন করছে। তিনি জেল রিমান্ড সব সহ্য করেছেন।বার বার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েও এই বৃদ্ধ বয়সে আপনার প্রতি কোনো আক্ষেপ নাই।
তিনি অসহায়ের মতো বলে যান তিনি কি কি করেছেন,বার বার আপনার সাথে একান্তে ৫ মিনিট কথা বলতে চেয়েও পারেননি। ক্লিনহার্ট অপারেশনের সময় সেনাবাহিনী আমার বাবার খোঁজে বার বার বাড়িতে আসতো।

আমি বাবার রাজনৈতিক কাজগুলি দেখতাম আর তাই আমিও সেনাবাহিনীর কারণে বাড়ি ছাড়া ছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার পিতা দলের জন্য কি কি করেছেন তা আমি লিখে শেষ করতে পারবো না,আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি ৪ টি বিষয়ে মাস্টার্স করেছি,রাজনীতির উপরে দুটি,অন্য সাবজেক্টে আরো দুটি মাস্টার্স। আমি পি এইচডির জন্য আপনাকে বেছে নিয়েছি। যদিও আপনি মহা সমুদ্র,আপনাকে নিয়ে গবেষণা করা আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের জন্য কঠিন। এই আমি মানুষের জন্য কতটা কাজ করেছি তা সকলে অবগত!ছোট থেকে নিজে পায়ে হেঁটে গিয়ে রিক্সা ভাড়া মানুষকে দিতাম।

টাকা থাকা অবস্থায় এই জীবনে কোনোদিন কাউকে খালি হাতে ফিরাইনি।
অসহায় দরিদ্র মানুষ আমায় রেগুলার পাইতো,আমি তাদের পাশে থেকে কতটা কাজ করেছি তা সকলে জানেন।
আমার পিতা জীবনে একটি টাকা ঘুষ খাননি,আমিও কোনো কারণে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি একজন লেখক।

অথচ আমার কি পরিণতি। মাননীয় নেত্রী আমি এমন কি অপরাধ করেছি যে আমায় এ সাজা দিলেন,যদি আমার কোনো অপরাধের কারণে আমায় বঞ্চিত করে থাকেন তবে দয়া করে আমায় মৃত্যুদন্ড দিন। অপরাধ একটাই আমি নানা দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে লবিং করতে পারিনি,আমি এবং আমার পিতা আপনার উপর ভরসা করে ছিলাম। প্রাণের নেত্রী আমার লেখায় অনেক ভুল থাকতে কারণ কষ্ট আর অবহেলায় আমার শরীর কাঁপছে।

আওয়ামীলীগ যদি রক্তের মূল্যায়ণ করে থাকেন,বঞ্চিতের মূল্যায়ণ করে থাকেন তবে আমি এবং আমার বাবা কেনো বার বার বঞ্চিত হচ্ছি! তার এই পোস্ট সম্পর্কে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে কথা হলে তারা বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত মতামত। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও দলের সভাপতির নির্দেশ বা আদেশ অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই। দল করলে এবং দলের প্রতি অনুগত থেকে অবশ্যই দলের প্রধানের নির্দেশ মানতে হবে এবং না মানার কোনো সুযোগ নেই। আর দলীয় মনোনয়ন দেওয়া না দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র দলের সভাপতি শেখ হাসিনার। আর এ নিয়ে মন্তব্য না করাই ভালো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: