ময়মনসিংহ নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্কে মিশুক রিক্সা চালক হাসেম হত্যাকান্ডে চার ঘাতকসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পৃথক এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। হত্যাকান্ডের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটনসহ লুণ্ঠিত মিশুক রিক্সা উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত ঘাতকরা হলো, মোঃ আলমগীর, রফিকুল হাসান তপু, রাকিব হাসান ওরফে রাকিবুল ইসলাম, আরাফাত হোসেন বাবু। এছাড়া চালককে হত্যাশেষে চুরি করা মিশুক ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো, ফরহাদ, সুমন শেখ এবং আলম। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান,গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ময়মনসিংহ নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্ক সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাতনামা রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা এ লাশটিকে তার আত্মীয়-স্বজনগণ সনাক্ত করেন। তার নাম হাসেম মিয়া। সে দাপুনিয়া কলাপাড়ার মৃত জহির উদ্দিন ওরফে জহুর উদ্দিনের ছেলে। পেশায় একজন মিশুক রিক্সাচালক।
এ ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং-২৬, তাং-১০/০২/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
মিশুক চালককে হত্যা করে মিশুক ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পুলিশ সুপার এর দিকনির্দেশনায় ডিবি'র ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীদের গ্রেফতারে নামেন। এ টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কোতোয়ালী ও গৌরীপুর থানা এলাকা থেকে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত মোঃ আলমগীর, মোঃ রাকিবুল হাসান তপু, মোঃ রাকিব হাসান ওরফে রাকিবুল ইসলাম ও আরাফাত হোসেন বাবুকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায় গত ৮ ফেব্রুয়ারী রাতে আলমগীর, রাকিবুল হাসান তপু, রাকিবুল, আরাফাত হোসেন বাবু ও পলাতক অপর একজন সহ ৫ জন একত্রে শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ মোড় স্মৃতিসৌধের মাঠে বসে একটি অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক রাত ১২ টারদিকে তারা শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ হতে হাসেমের মিশুক রিক্সা ভাড়া করে। পরে তাদের নিজেদের আরেকটি অটো নিয়ে হাশেমের মিশুকসহ সার্কিট হাউজ মাঠে নিয়ে যায় যায়। তারপর সার্কিট হাউজ মাঠে দাঁড়িয়ে মিশুক রিক্সা চালক হাসেমের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তারা এলোপাথাড়ি মারপিট করে বেড়িবাঁধের নিচে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। এ সময় চক্রটি হাশেমকে হাত পা বেধে এবং ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে মিশুক রিক্সাটি নিয়ে শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ পালিয়ে যায়। পরে গ্রেফতারকৃত আলমের কাছে নগদ ৩৪ হাজার টাকায় মিশুক বিক্রি করে। পরে মিশুক বিক্রির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এর মাঝে রাকিবুল ইসলাম তপু চরপাড়া মেডিকেলের সামনে সংগঠিত শরিফ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী ছিলেন। উক্ত মামলায় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছিলেন এবং ১৯ মাস জেলে থেকে ২ মাস আগে জামিনে বের হন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: