ডিজে সাউন্ডের শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ নরসিংদীবাসী

আশিকুর রহমান, নরসিংদী প্রতিনিধি | ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ০৮:০২

ডিজে সাউন্ডের শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ নরসিংদীবাসী
নরসিংদী শহরের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে ডিজে সাউন্ড বক্সের কারণে মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ হচ্ছে। ফলে নগর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। প্রতিদিন শহরের কোন না কোন কমিউনিটি সেন্টারে ডিজে সাউন্ড বক্স,  পটকাবাজি, ডিজেল চালিত জেনারেটরের কারণে শব্দ দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
 
বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার গুলোতে বিয়ে সহ নানা অনুষ্ঠানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে বাজে ডিজে সাউন্ড সিস্টেমের বক্স। এসব উচ্চ শব্দের গান মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণের কারণে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। চরম ভূগোন্তিতে পড়তে হচ্ছে শিশু সহ অসুস্থ রোগীরা। শব্দদূষণ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অর্থদন্ড ও কারাদন্ডের বিধান থাকলেও তা প্রয়োগ হচ্ছে না। আগামী মাসে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। আর সামনে রয়েছে  এইচএসসি পরীক্ষা। এতে করে পরীক্ষার্থীদেরও নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা-পড়ায় চরম সমস্যা হচ্ছে।
 
সূত্রে জানা গেছে, শব্দদূষণ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে। ২০০৬ সালের পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ আইনের শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা অনুযায়ী নীরব এলাকায় ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিনে ৫০ এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ এবং রাতে ৪৫ ডেসিবেল, শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবেলের মধ্যে শব্দের মাত্রা থাকা বাঞ্ছনীয়।
 
এই আইন অনুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে নীরব এলাকা চিহ্নিত করা হয়। শুধু নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে আবাসিক এলাকায় শব্দের মান মাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রের ব্যবহার করা গেলেও শহরের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে নিত্যদিন অবাধে চলছে শব্দ দূষণকারী যন্ত্রের ব্যবহার।
 
স্হানীয় এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠনের একাধিক নেতা বলেন, স্বাধীন দেশ। যার যা খুশি তাই করে। মানুষের চিন্তা কেউ করে না। এভাবে উচ্চশব্দে মাইকে গান বাজিয়ে উৎসব হয় না, রীতিমত মানুষকে অত্যাচার করা হচ্ছে। ইদানীং শহরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দদূষণ বেড়েছে। যত্রতত্র মাইক বাজানো, পটকাবাজির আওয়াজ, ডিজেল চালিত জেনারেটর, ডিজে সাউন্ড সিস্টেম বক্সের মাধ্যমে উচ্চশব্দে গান বাজানো হচ্ছে। তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে স্থানীয় জনসাধারণ সাময়িক বধির বা স্থায়ী বধির হওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং শিশু-কিশোররা রয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। 
 
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকতা বলেন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতকে নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে কোন উৎসব, সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকার, অ্যামপ্লিফায়ার বা কোন যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করতে হলে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি লাগবে। এসব কার্যক্রম সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার বেশি হবে না। পাশাপাশি রাত ১০টার পর কোনভাবেই শব্দ দূষণকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না বলে জানান।
 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: