ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় অটো চালক শামীম হত্যাকান্ডের মুলহোতা রাকিবুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ঘাতককে গ্রেফতার করে ডিবি'র অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ফারুক হোসেন আবারো তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। অটো বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হত্যাকান্ড সংঘটিত করেছে বলে গ্রেফতারকৃত রাকিব পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাঃ শামীম হোসেন রবিবার এক প্রস ব্রফিংয়ে এ সব জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, গত ২০ জানুয়ারি সকালে জাতীয় জরুরী সেবা '৯৯৯' এর মাধ্যমে জনৈক ব্যক্তি মুক্তাগাছার তারাটি ইউনিয়নের বিরাশী গ্রামের মাদ্রাসার পিছনে অজ্ঞাতনামা একজন কিশোরের লাশ পাওয়া গেছে বলে জানান। সংবাদ পেয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকষ দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি শামীম মিয়া (১৬), পিতা-সিরাজ মিয়া, গ্রাম-তারাটি(চরপাড়া) এর লাশ হিসেবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। শামীম মিয়া পেশায় একজন অটোচালক। এ সংক্রান্তে মুক্তাগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় মুক্তাগাছায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় ডিবির ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে এসআই শাহ্ মিনহাজ উদ্দিন ও এসআই পরিমল চন্দ্র সরকার তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর তদন্ত শুরু করে। এ হত্যাকান্ডের শনিবার সন্ধ্যায় হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত মূল হত্যাকারী মোঃ রাকিবুল ইসলামকে ঐ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সে তারাটি চরপাড়ার শফিকুল ইসলামের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত মোঃ রাকিবুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। বিগত কয়েকদিন যাবত তার কিছু অর্থের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। গত প্রায় দুই মাস আগে সে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সাপ্তাহিক ৩ হাজার টাকা কিস্তিতে আড়াই টাকা ঋণ নেয়। সে কিস্তির টাকা পরিশোধে অপারগ হয়ে গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিবেশী অটোচালক শামীমের সাথে ভাড়া নেওয়া অটো গাড়ীটি বিক্রি করবে মর্মে পরামর্শ করে। সেই মোতাবেক গত ১৯ জানুয়ারী বিকালে মুক্তাগাছার ফকিরগঞ্জ বাজার থেকে রাকিব এবং শামীম ভাড়ায় চালিত অটো-রিক্সা নিয়ে অনেকক্ষণ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। একসময় জামালপুর সদরের নরুন্দি বাজারে যায়। সেখানে ১০ হাজার টাকায় অটো বিক্রি করে। শামীম এই টাকা হস্তগত করে রাকিবুলকে মাত্র ২ হাজার টাকা দেয়। এতে রাকিব ক্রোধের বশবর্তী হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে সে শামীমকে কৌশলে ডেকে নিয়ে মুক্তাগাছার বিরাশি গ্রামের একটি নির্জন জায়গায় যায়। সন্ধ্যায় শামীমের পরিহিত জ্যাকেটের ফিতা টেনে খুলে তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাদ্রাসার পিছনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: