মোংলায় পিঠা উৎসব

আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি | ১৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৯:১০

মোংলায় পিঠা উৎসব
পৌষ-পার্বণ মানেই বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে পিঠা উৎসবের ধুম। ভোজন রসিক বাঙ্গালীর ঐতিহ্যের সাথে যেন মিশে আছে ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা সহ নানা পিঠার নাম।
 
জাতীয় নির্বাচন শেষে মোংলায় এবার আনন্দ মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে পৌষের শেষে শীতকালীন পিঠা উৎসব। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় হরেক রকমের বাহারি পিঠার উৎসবে। কনকনে শীতে গরম গরম হরেক রকম পিঠার স্বাদ নিতে হিন্দু-মুসলিম ও খ্রীষ্টিয়ান সহ বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের নানা বয়সের হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
 
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে দিগরাজের বুড়িরডাঙ্গা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌষের শীত আসলেই যেন পিঠার খাওয়ার ধুম পড়ে দেশের গ্রামে গ্রামে। শহুরে জীবনে যেন অনেকটা অপরিচিত এই দৃশ্য। তবে মোংলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকাটা যেন এক ভিন্নচিত্র। পৌষের শুরুতেই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরী না করে পৌষের শেষে এসে পিঠা উৎসবে আয়োজন করেণ এলাকাবাসী। আর বাঙ্গালির চিরাচরিত এই ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে সকলে মিলে করা হয় জমজমাট পিঠা উৎসব। এ মেলায় গরিব-ধনি, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ উৎসবে মিলিত হয়। তাই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গত ৭ বছর ধরে পিঠা উৎসব পালন করছে বুড়িরডাঙ্গাবাসী। খাওয়া শেষে কুইজের মাধ্যমে সেরা পিঠা তৈরী নারীদের দেওয়া হয় পুরস্কারও।
 
বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের কালী বাড়ী, বৈরাগখালী ও বাটারাবাদ গ্রামের মানুষ এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। পাচঁ দিন আগ থেকে পিঠা উৎসব পালনের প্রস্তুতি শুরু করে তারা। সোমবার (১৫ জানুয়ারী) ভোর থেকে শুরু হয় পিঠা তৈরীর কাজ। সারিবদ্ধ ভাবে চুলা তৈরী করে গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারীরা পিঠা তৈরীর শুরু করেন। পরে সবাই একত্রিত ভাবে বসে চলে পিঠা খাওয়ার আয়োজন। মুলত পিঠার সঙ্গে পৌষ সংক্রান্ত শব্দটি অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। বিশেষ করে সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই অনেকেই এই দিনের আগে পিঠা খান না, আর তাই সংক্রান্তি পিঠা উৎসবে পরিণত হয়েছে। তবে এখানে সকল ধর্মের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আসতে দেখা যায়।
 
পিঠা উৎসব আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস জানান, গত ৭ বছর পূর্বে থেকে মোংলার বুড়িরডাঙ্গায় এলাকায় পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছে এলাকাবাসী। প্রতি বছর একটি স্থানে এ আয়োজন সিমাবদ্ধ থাকলেও এবার তিনটি স্থানে এক সাথে পিঠা উৎসব করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ আয়োজন ছড়িয়ে দেওয়া হবে পুরো উপজেলা ব্যাপী বলে জানায় আয়োজক কমিটির আহবায়ক।
 
শুধু বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের এক সাথে তিনটি স্থানে নয় পিঠা উৎসবটি মোংলা উপজেলার সকল ইউনিয়নে ছড়িয়ে পরুক এমনটাই আশা করছেন এলাকাবাসী। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: