রাণীশংকৈলে ইটভাটা বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ

আনোয়ার হোসেন আকাশ | ৫ জানুয়ারী ২০২৪, ১৯:২৯

রাণীশংকৈলে ইটভাটা বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে একটি ইটভাটা বন্ধের দাবীতে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের মহেষপুর এলাকার শতাধিক বাসিন্দা।

জেলা প্রশাসক ছাড়াও ওই দরখাস্তের অনুলিপি দিয়েছেন বন পরিবেশ মন্ত্রণালয়, সচিব বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়,বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর,বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দিনাজপুর, জেলা শিক্ষা অফিসার,উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্থানীয় চেয়ারম্যান বরাবরে।

অভিযোগের সাথে ওই এলাকার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইটভাটার কারণে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ্য করে ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত ৪ বছর যাবত পূর্ব মহেষপুর এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে মাহাতাব উদ্দীন ও তার ছেলে জসীম উদ্দীনসহ কয়েকজন মিলে আবাদী জমিতে জে.এম.কে  নামক ইটভাটা স্থাপন করে ব্যবসা করছে। সেখানে ইটভাটার কারণে আশপাশের আম লিচুসহ বিভিন্ন বাগানের ফল ভালো হচ্ছে না। আবাদী জমিতে ফসল ভালো হচ্ছে না। তারা অভিযোগে আরো উল্লেখ্য করেন,জে.এম.কে ভাটার পাশে ফোর স্টার নামক ইটভাটা রয়েছে। দুটি ইটভাটার কারণে এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া রাস্তার পাশে ইটভাটার মাটি স্তুপ করে রাখায় রাস্তায় গাড়ী চলাচলে ধুলোবালু সৃষ্টি হয়।

ইটভাটা দুটির আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানকার শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া ইটের গাড়ী চলাচলের কারণে রাস্তা দিয়ে চলতে নিরাপদবোধ মনে করে না। ইটভাটার ধোয়ায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ। তাই ওই ৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরের অভিযোগের সাথে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন।

অভিযোগকারীদের মধ্যে ১ম স্বাক্ষরকারী নুর আলম বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যায়। রৌদে বাসাবাড়ীর কাপড়ের উপরে ছাই এসে পড়ে। ফসলের মাঠ আমের বাগানের পরিবেশ নষ্ট করেছে ইটভাটা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গেল বছর যেমন মাঠের ফসল ভালো হয়নি। একইভাবে আমের ফলনও খুব একটা বেশি ভালো হয়নি। তাই তিনি মহেষপুর এলাকার স্বার্থে ইটভাটা বন্ধের দাবী জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জে.এম.কে ও ফোর স্টার ইটভাটা দুটি মীরডাঙ্গী বাজার থেকে মহেষপুর গ্রামের প্রবেশ পথে। এখানে এলজিইডি কর্তৃক পাকা রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তার দু,পাশেই ইটভাটা দুটি।  রাস্তার পাশেই ইটভাটার সংরক্ষিত মাটি স্তুপ করা রয়েছে। ইটভাটার গাড়ীগুলো অনায়াসে উঠানামা করছে। গাড়ী চলাচলের সাথে সাথে ব্যাপক ধুলোবালু উড়ছে। ইটভাটা দুটির পাশে একর একর আবাদী জমি ও আম বাগান রয়েছে। কৃষি জমির ঠিক মাঝেই ইটভাটা পরিচালনা হচ্ছে।

ফোর ষ্টার ইটভাটার স্বত্তাধিকারী হিমেল আলী বলেন, নিয়ম মেনেই ইটভাটা করা হচ্ছে। তার ইটভাটার লাইসেন্স রয়েছে।

জেএমকে ইটভাটার স্বত্তাধিকারী জসিমউদ্দীন বলেন, উদ্যোশ্যে প্রণিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় ধুলোবালু না উড়ানোর জন্য সব সময় পানি দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাণীশংকৈলের আর ১০টি ইটভাটা যেভাবে চলছে তার ইটভাটাটিও সেভাবে চলছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলায় কোন ইটভাটার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্সহীন ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১টি ইটভাটায় অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: