রাজিবপুরে শশুর-শাশুড়ী-দেবর এর পিটুনিতে গৃহবধূ নিহত

শরিফুল ইসলাম, রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি | ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৭

রাজিবপুরে শশুর-শাশুড়ী-দেবর এর পিটুনিতে গৃহবধূ নিহত
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে শশুর রহিজল হক (৪৮), সৎ শাশুড়ী সালেহা খাতুন (৪০) ও দেবর সানোয়ার (২০) এর পিটুনিতে তাসলিমা নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। 
 
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের বদরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
 
নিহত তাসমিলা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মৌলভীরচর এলাকার মৃত সালাম এর মেয়ে। ১০বছর আগে বদরপুরের রহিজল হকের পুত্র মুকুল হোসেনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহে আবদ্ধ হন তিনি। বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করা হতো তাকে।
 
নিহত গৃহবধূর "যা" (দেবর এর স্ত্রী) মোমেনা খাতুন (২৩) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিয়ে হয়েছে প্রায় ১০বছর হলো। সন্তান না হওয়ায় মাঝেমধ্যেই শারিরীক নির্যাতন করতো। আমার তিন বছর হলো বিয়ে হয়েছে আমাকেও নির্যাতন করে। তারা একটু ত্রুটি পেলেই নির্যাতন করে। 
 
প্রতিবেশী লাল মিয়া (৪২) ও আব্দুল লতিফ (৫০) বলেন, মেয়েটা অত্যান্ত ভালো-সহজসরল। ওই ছেলেটা (নিহতের স্বামী) কৃষি কাজে যখনই ঢাকায় যায় তখনই মেয়েটার ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে তার সৎ শাশুড়ী, শশুর ও দেবর। আজ এমনভাবে মেয়েটাকে মেরেছে যে এতো ভালো মেয়েটা মরেই গেছে। আমরা এই হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
 
প্রত্যক্ষদর্শী মরিয়ম আক্তার (৫৫) জানান, তাসলিমা টয়লেটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। তার দেবর সানোয়ার টয়লেটে যাবে, তাকে সরে দাঁড়াতে বললে সরতে দেরি হয় পরে তার সৎ শাশুড়ী গিয়ে তাকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে তার শশুর রহিজল তাকে আরও মারধর করতে বলে। একসময় শশুর, শাশুড়ী ও দেবর মিলে এলোপাতাড়ি পেঁটায়। আমি তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমার ওপর তারা চোটে আমাকেও মারতে আসে। পরে চিৎকার করলে এলাকার মানুষ এগিয়ে এলে দেবর সানোয়ার পালিয়ে যায় পরে সবাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সামিউল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের দাগ ছিলো।
 
রাজিবপুর থানার ওসি (তদন্ত) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাজিবপুর বদরপুর এলাকায় শাশুড়ী কর্তৃক গৃহবধূ হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা ও মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
 

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: