ছাত্রদল নেতা সাদেক হত্যা মামলায় খোকনের রিমান্ড মঞ্জুর

আশিকুর রহমান, নরসিংদী প্রতিনিধি | ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৮

ছাত্রদল নেতা সাদেক হত্যা মামলায় খোকনের রিমান্ড মঞ্জুর
নরসিংদীতে ছাত্রদল নেতা সাদেক ও আশরাফুল আলোচিত হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের বিরুদ্ধে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত
 
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত, নরসিংদী এর বিচারক মেহেদি হাসান এ আদেশ দেন।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ মে নরসিংদীতে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল নামে ছাত্রদলের দুই নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন এবং তার সহধর্মিণী শিরিন সুলতানা সহ ৩০ জনের নামে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত হত্যা মামলায় খায়রুল কবির খোকন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি আর নিন্ম আদালতে আত্মসমর্থন করেননি। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কয়েকদিন পলাতক থাকার পর নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।
 
ছাত্রদল নেতা সাদেক ও আশরাফুল হত্যা মামলার জামিন শুনানি ছিল তার। দুইপক্ষের যুক্তিতর্ক ও শুনানির পর আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে খোকনের বিরুদ্ধে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 
 
খায়রুল কবির খোকনের পক্ষে এডভোকেট আব্দুল কাদের টিটু ও বাদী পক্ষে এডভোকেট  শফিকুল ইসলাম মামলাটিল পরিচালনা করেন। 
 
মামলার বাদী আলতাফ হোসেন বলেন, আজ আমার ভাই সাদেক হত্যা মামলার ধায্য তারিখ ছিল। আসামী বিএনপির নেতা খোকন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তার জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম। আদালত উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানির পর আসামীর জামিন না মজ্ঞুর করে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।অপরদিকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে আদালতে উপস্থিত করা হবে সেজন্য সকাল থেকেই আদালত চত্বরে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশৃঙ্খলা এড়াতে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 
 
উল্লেখ, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ঘোষিত ওই কমিটিতে সিদ্দিকুর রহমানকে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া। এরই সূত্র ধরে ছাত্রদলের প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় পদবঞ্চিত নেতা মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার অনুসারীরা খায়রুল কবির খোকনের গাড়ী বহরে হামলা, দফায় দফায় দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের মত ঘটনা ঘটায়।
 
পরে ২৫ মে দুপুরে ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পিকআপ ভ্যান ও শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চিনিশপুর বিএনপির কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময় খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা মিছিলে ককটেল নিক্ষেপ করেন।
 
তারা লাঠি ও ধারালো অস্ত্রদিয়ে হামলা করে অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সাদেকুর রহমানকে ঘেরাও করে খুব কাছ থেকে তার মাথায় গুলি করে। এ ঘটনায় আশরাফুল নামে আরো একজনকে গুলি করা হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জেলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদেকুর রহমান মারা যান। এর একদিন পর শুক্রবার সকালে অপর ছাত্রদল নেতা আশরাফুল মারা যান। পরে সাদেকুর রহমানের ভাই বাদী হয়ে খোকন ও তার সহধর্মিণীসহ ৩০ জনের নামে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: