কোরবানির বাজার কাঁপাতে গরু প্রস্তুত করছে ভোলার ডেইরি ফার্মগুলো

মো. হাসনাইন আহমেদ, ভোলা | ১৬ জুন ২০২৩, ২২:৩৪

প্রতীকী ছবি

ভোলায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছে ভোলার ২০ হাজার খামারি। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত খামারিরা খামারে পশু পরিচর্যার কাজ করছেন।

ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চরণাপ্তা, গ্রামে সাহাদ জাহান ডেইরি ফার্মের মালিক মো. আবু ছায়েম বলেন" এ বছর যদি ভারতীয় গরুর আমদানি বন্ধ থাকে তাহলে খামারিরা বাজার দাম ভালো পাবে। তাই আমরা খামারিরা দাবি জানাচ্ছি যাতে অবৈধ পথে দেশে পশু না আসতে পারে।

প্রতিবছরের ন্যায় এবছর ও তিনি কোরবানি ঈদে বিক্রির আশায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১০০-১৫০ টি গরু প্রস্তুত রেখেছেন। তিনি আসা করছেন এবার ভালো দামে তিনি পশু বিক্রি করতে পারবেন। খামারে ৩০০ থেকে ৪০০ এর অধিক গরু রয়েছে তার খামারে ,তার খামার থেকে উৎপাদিত দুধ ভোলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় সরবরাহ হচ্ছে।

তিনি তার উৎপাদিত খাবার দিয়েই গরুর খাবারের চাহিদা মিটান, নিজস্ব খামারে উৎপাদিত ভুট্টা থেকে সাইলেন্স তৈরি করে গরুকে খাওয়ান, পাশাপাশি শুকনা ভুট্টা, মশারির ডাল, মাসকলাইয়ের ডাল, সয়াবিন, সরিষা ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ান ।

সব খামারিরা বলছেন, গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু পালনে খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে সীমান্ত দিয়ে চোরাই গরু আসা নিয়েও শঙ্কিত তারা। যদিও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অবৈধ পথে পশু বিক্রি বন্ধে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় অবৈধ পথে আসা কোরবানির পশু বিক্রি বন্ধে, এরইমধ্যে হাটগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

ভোলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গরুর হাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, বাজারে জাল টাকার যে একটা সমস্যা হয় তা যাতে না হয়। সে জন্য জেলা পুলিশ শক্ত নজরদারি করছে

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন,গবাদি পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে স্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধে উপজেলা পর্যায়ে উঠান-বৈঠক করে খামারিদের হাতে-কলমে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার পশু খামার রয়েছে৷ প্রতিটি খামারে দিনরাত প্রাকৃতিক উপায়ে পশু হ্নষ্টপুষ্ট করার কাজ চলছে। প্রতিটি খামারে রয়েছে ছোট, মাঝারি ও বড় ধরনের কোরবানি পশু।

খামারিরা জানান, গো খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারের ব্যয়ও বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি ভুট্টার ভুষি ২৬ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন তা ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে অন্যান্য খাবারের দামও। তাই প্রতিটি গরু লালন-পালনে বাড়তি খরচ হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। যা বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

এদিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, গবাদি পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে স্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধে উপজেলা পর্যায়ে উঠান-বৈঠক করে, খামারিদের হাতে কলমে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মণ্ডল বলেন, কৃত্তিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করা যাবে না। স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতে হবে। এছাড়া আরও নানান বিষয়ে আমরা খামারিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়েই জেলার চাহিদা মেটানো যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

এছাড়াও জেলায় অনলাইনে অন্তত ৮ হাজার গরু-ছাগল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: