ইসলামি বক্তা শরীফুলের জিহ্বা কাটায় গ্রেপ্তার ৫

সময় ট্রিবিউন ডেস্ক | ৯ মার্চ ২০২৩, ০৫:২১

সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদরাসা শিক্ষক ও ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলাম ভূইয়ার জিহ্বা কেটে দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ।

র‍্যাব-৯ ও আখাউড়া থানা পুলিশের অভিযানে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। 
 
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের জাকির হোসেন ওরফে জাক্কু (৪৮), মাহবুবুল আল ওরফে শিমুল (৩৩), একই উপজেলার চাওড়া গ্রামের মো. সুমন (৩৫) ও চাওড়া দৌলতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. আমিরুল ইসলাম (২০) ও সিঙ্গারবিল গ্রামের শাহিনুর ইসলাম (৩৫)। 
 
র‍্যাব কর্মকর্তারা জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ওই মাদরাসা শিক্ষককে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। র‍্যাবের একাধিক দল গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেতে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মামলারি আসামি জাকিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহফিলে শরীফুলের বক্তব্যের কিছু অংশ আসামিদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। সেই কারণেই তারা হামলা করে।
 
র‍্যাব-৯ এর অধিনায়ক ‍উইং কমান্ডার মুমিনুল হক বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে র‍্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। ধর্মীয় কোনো সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।
 
গত শনিবার (৪ মার্চ) শরীফুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শরীফুল বিজয়নগরের শ্রীপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক। তিনি বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দেন। ওইদিনও একটি ওয়াজে বক্তব্য দিয়ে ফিরছিলেন তিনি। 
 
গত সোমবার (৬ মার্চ) বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাহিনুর ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে এঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করে আখাউড়া থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।  
 
গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাতে হামলার ঘটনায় শরীফুলের চাচী বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটিয়ার গ্রামের মো. রায়হান (৩০) ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
 
এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের মাহফিলে বক্তা হিসেবে বয়ান করেন শরীফুল। মাহফিল শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে রাত সোয়া ১২টার দিকে আখাউড়ার রামধননগর গ্রামে পৌঁছানোর পর দুর্বৃত্তরা গতিরোধ করে। মামলার প্রধান আসামি রায়হান বাঁশ দিয়ে শরীফুলের মুখে আঘাত করেন। এতে তার জিহ্বার সামনের অংশ সামান্য কেটে যায়। ২ নম্বর আসামি জাক্কু ধারাল অস্ত্র দিয়ে শরীফুলের বাঁ পায়ে আঘাত করেন। পরে তাদের সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা অন্য আসামিরা লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শরীফুলকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় শরীফুলের সঙ্গে থাকা সদর উপজেলার খেওয়াই গ্রামের মো. ওবায়দুল্লাহকেও (৩৪) মারধর করা হয়। পরে আসামিরা শরীফুলের মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন। মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং শরীফুল ও ওবায়দুল্লাহর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। আহত শরীফুল ও ওবায়দুল্লাহকে উদ্ধার করে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শরীফুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এস আই আবু সালেক সাংবাদিকদের জানান, এর আগেও আসামিরা আহত শরীফুলের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট ছিল।
 
বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ২নং কেবিনে চিকিৎসাধীন শরীফুল ইসলামকে অনেকে দেখতে যান। যারাই তার সঙ্গে কথা বলছেন আহত শরীফুল খাতায় লিখে উত্তর দিচ্ছেন। তিনি খাতায় লিখে জানান, হামলাকারীরা কেন তাকে আঘাত করেছেন সেটি তার জানা নেই। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: