চুয়াডাঙ্গায় টিউবয়েলের পানি পানে রোগমুক্তির গুজব

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:২০

সংগৃহীত

পায়রা খাতুনের স্বপ্নে পাওয়া পানি পান করলেই ভালো হচ্ছে জটিল সব রোগ। গুজবে কান দিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো নারী ছুটে আসছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে। তাদের বিশ্বাস পায়রা খাতুনের বিশেষ টিউবয়েলের পানি পানে মিলবে আরোগ্য। পোলতাডাঙ্গার ইকরামুল জোয়ার্দ্দারের বাড়িতে এখন সাধারণ নারীদের ঢল। সচেতন মহলের দাবী, এ ধরণের অপচিকিৎসায় ঘটতে পারে বিপত্তি।

ইকরামুল জোয়ার্দ্দার জানান, বছর তিনেক আগে স্বপ্নে সর্বরোগের চিকিৎসার নির্দেশনা পান তার স্ত্রী পায়রা খাতুন। এর আগেই তার মাথার চুলে জট বাধে। স্বপ্নের নির্দেশনা মতো বাড়ির এক কোণে বসানো হয় একটি টিউবয়েল। প্রায় নয় মাস আগে গ্রামের দুই নারীকে অসুস্থ অবস্থায় টিউবয়েলের পানি পান করতে দেন পায়রা বেগম। এতে সুস্থ হয় ওই নারীদের পরিবারের লোকজন।
পায়রা খাতুন বলেন, এক সময় তিনি নিজেই নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। বছর তিনের আগে হঠাৎ করে তার মাথার চুলে জট দেখা দেয়। একপর্যায়ে স্বপ্নে তাকে অসহায় রোগিদের চিকিৎসার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ মতো বাড়ির এক কোণে বসান একটি টিউবয়েল। যে টিউবয়েলের পানি পানে মিলবে জটিল রোগের আরোগ্য।
এক পর্যায়ে বিষয়টি মুখে মুখে এসব ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। এতে দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ নারীরা পানি নিতে আসছেন পোলতাডাঙ্গা গ্রামে। স্থানীয়রা জানায়, সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে ঢল নামছে সাধারণ নারীদের। হাতে বিভিন্ন আকারের বোতল। উদ্দেশ্যে পায়রা খাতুনের বিশেষ পানি সংগ্রহ। পুরুষের প্রবেশ নিষেধ হওয়ায় দূর-দূরান্তের নারীরাই ভীড় করছে পায়রা খাতুনের বাড়ি।
পানি নিতে আসা নারীদের দাবী, পায়রা খাতুনের দেয়া পানি বিশ্বাস নিয়ে পান করলে মিলছে উপকার। পুরোনো অনেক রোগবালাই থেকেই তারা উন্নতি লক্ষ্য করছেন। অবশ্য এজন্য তাদের কাছে কোনো টাকা-পয়সা কেউ দাবী করেনি। কেউ কেউ খুশি হয়ে টাকা-পয়সা, চাল-ডাল দিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ঠ ৪ নং বাড়াদী ইউপি চেয়ারম্যান তবারক হোসেন বলেন, গুজবে কান দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পোলতাডাঙ্গা গ্রামে ছুটে আসছেন নারীরা। টিউবয়েলের সাধারণ পানিতে বিশেষ গুণ থাকলে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রয়োজন হতো না।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসা বিজ্ঞানে পানিপড়া, ঝারফুকের কোনো স্থান নেই। এই পানিপড়ার চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকেই সঠিক সময়ে নিজের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এতে সাধারণ রোগিদের আরো বেশি ক্ষতির আশংকা রয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: