শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূূনর্বাসন কেন্দ্রে বেড়ে উঠা আঙ্গুরীর বিয়ে

এহসান রানা, ফরিদপুর | ২১ আগষ্ট ২০২২, ১৭:৪৪

সংগৃহীত

বাবা-মা পরিবার না থাকলেও সকল আয়ােজন সম্পূর্ন করেই বিয়ে হলাে আঙ্গুরীর।

দেখে মনে হবে কােন ধনী পরিবারের সন্তানের বিয়ের অনুষ্ঠান। ধুমধাম আয়োজন কিন্তু এই আয়ােজন শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূূনর্বাসন কেন্দ্রে বেড়ে উঠা বাবা-মা হারা আঙ্গুরীর জন্য।

৬০০ লােকের খাবারের আয়ােজন। ছিল প্যান্ডেল, ছিল সাজানাে গেট। ৫০ জন সঙ্গী নিয়ে এসেছিলো বরযাত্রী।

জানা যায়, ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমানের বাসিন্দা আঙ্গুরীর বাবা মােতালেব শেখ মারা যান জন্মের আগেই, ৪ বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মা ঝর্না বেগম। এরপর আঙ্গুরী নানীর কাছে থাকা শুরু করলেও কিছুদিনের মধ্যে নানীও মারা যান। পরে স্থানীয় এক সমাজকর্মীর মাধ্যমে আঙ্গুরীর জায়গা হয় ফরিদপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে।

শনিবার(২০ আগস্ট) দুপুরে সেই আঙ্গুরীর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে শহরের কমলাপুরের পূনর্বাসন কেন্দ্রে। বর শহরের বায়তুল আমান এলাকার ইউনুছ সরদারের ছেলে মুরাদ সরদার।

সমাজসেবা অফিসার শেখ মুহম্মদ সুজাউদ্দিন রাশেদ জানান, মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারের একটি মেয়ের যেভাবে বিয়ে হয়, ঠিক সেভাবেই বিয়ের আয়ােজন করা হয়েছে। কােন কিছুর কমতি করা হয়নি। যাতে ওদের মনে কােন কষ্ট না থাকে। বিয়েত জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন উপহার তাদের দেয়া হয়েছে। তারমধ্যে মেয়েকে একটি সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে, আর ছেলেকে তার কাজের সহায়ক হয়, এমন কিছু করা হবে, যদি ছেলেটি সেটা চায়।

কমলাপুর কেন্দ্রের উপ প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা হাসিনা আক্তার জানান, আঙ্গুরী যখন এখানে আসে যখন তার বয়স ছিলো ৫ বছরের একটু বেশী। এখন আঙ্গুরীর বয়স ১৮ বছর। দীর্ঘ ১২ টি বছর সে এখানে ছিলো। ১৮ বছর হওয়ার পর সরকারী নির্দেশনা মােতাবেক আমার ওর জন্য একটা উপযুক্ত পাত্র খুজতে থাকি। ওর দাদা বাড়ির এলাকারই একজন পাত্র পেয়ে যাই। ছেলে ফার্নিচারের কাজ করে।
তিনি আরও জানান, বর মুরাদ সরদার ৫০ জন সঙ্গীসহ এসছিলেন, দুই লাখ টাকা দেন মােহরে তাদের বিয়ে পড়ানাে হয়।

বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মাে. কামরুল ইসলাম, জেলা সমাজ সেবা অফিসার শেখ মো সুজাউদ্দিন রাশেদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মােল্যা, পৌর মেয়র অমিতাভ বােস, ফরিদপুরে কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজরর নেতৃবৃন্দ এনজিও ব্যাক্তিত্ব, ব্যবসায়ীসহ ৬ শতাধিক অতিথি।

উল্লেখ্য, এমন আয়ােজনে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে দেখে খুশি বিয়ের পাত্র-পাত্রী। পাত্রী আঙ্গুরী সবার কাছে দােয়া চেয়েছেন, যাতে তাদের নতুন জীবন সুখের হয়।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: