নারায়ণগঞ্জে নির্মিত ৩০টি রেসকিউ বোট হস্তান্তর

মোশতাক আহমেদ শাওন | ১৭ আগষ্ট ২০২২, ০৪:৩০

সংগৃহীত

বন্যা, নদী ভাঙনের মতো দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্মিত ৬০টির মধ্যে অবশিষ্ট ৩০টি মাল্টিপারপাস এক্সেসেবল রেসকিউ বোট (উদ্ধারকারী নৌযান) হস্তান্তর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বন্দরের সোনাকান্দা এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের মাধ্যমে এসব বোট হস্তান্তর করে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস (ডিইডব্লিউ) লিমিটেড।

হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠনে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়ে তারই সুযোগ্য বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নির্দেশনায় এই ধরনের আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন, প্রতিবন্ধি সহায়ক রেসকিউ বোট সম্পূর্ণ দেশীয় ব্যবস্থাপনায় তৈরী করার মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ডকইয়ার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিঃ, নারায়ণগঞ্জ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, সহকারী নৌ-প্রধান (ম্যাটেরিয়াল), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

জানাগেছে, ২০২০ সালের ২১ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডিইডব্লিউ লিঃ, নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে ৬০টি রেসকিউ বোটের জন্য সর্বমোট ২৭ কোটি টাকা মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ৫৮ ফুট দীর্ঘ, ১২.৫০ ফুট প্রস্থ এবং নট গতির এই রেসকিউ বোটগুলি ৮০ জন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন যার মাধ্যমে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত অঞ্চলসমূহের জনগণকে দ্রুততর সময়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে। বোটগুলির ড্রাফট অত্যন্ত কম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন সরু নদী পথে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে বন্যা দুর্গতদের সেবায় যাতায়াত করাসহ যে কোন স্থানে ল্যান্ডিং বিচিং করার মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় উদ্ধারকার্য চালাতে সক্ষম।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার কর্তৃক জারিকৃত কঠোর লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। ইয়ার্ডটি ঐতিহ্যবাহী নগরী নারায়ণগঞ্জের কোল ঘেঁষে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়ে ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মোট ২২ একর এলাকা সমৃদ্ধ এই ইয়ার্ড দেশের সবচাইতে ঐতিহ্যবাহী ও পুরাতন ডকইয়ার্ড, যার জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতের ক্ষেত্রে রয়েছে প্রায় শতবর্ষের প্রত্যক্ষ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা।

শিপবিল্ডিং ও মেরামতের পাশাপাশি সকল প্রকার স্টিল ইঞ্জিনিয়ারিং কাজসহ বিভিন্ন জাহাজের ইঞ্জিন ওভারহলিং থেকে শুরু করে প্রায় সকল ধরণের ভারী মেকানিক্যাল কাজ এই ডকইয়ার্ডের সক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত। নির্ভরযোগ্য ও যুগোপযোগী অবকাঠামো, গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবাসহ সকল সুযোগ সুবিধা, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিবেশ বান্ধব উৎপাদনমুখী কর্মপরিবেশ অত্র ইয়ার্ডের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের চালিকাশক্তি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: