ভরণপোষন চাওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল ছেলেরা

পাবনা প্রতিনিধি | ১৭ আগষ্ট ২০২২, ০৪:২৬

সংগৃহীত

বয়স হয়ে যাওয়ায় আয় রোজগার করতে না পেরে নিজের সন্তানদের কাছে ভরণ পোষন চাইলেন বাবা আবু বক্কার সিদ্দিক (৫২)। কিন্তু তিন ছেলে ভরণপোষন চাওয়ার অপরাধে তাদের বাবাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় সন্তানদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অসহায় পিতা। পাবনার চাটমোহর উপজেলার পূর্বটিয়ারতলা গ্রামে গত সোমবার (১৫ আগস্ট) এই ঘটনা ঘটে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের পূর্বটিয়ারতলা গ্রামের মৃত আদম মন্ডলের ছেলে আবু বক্কার সিদ্দিক। অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে তিন সন্তান নাজিম উদ্দিন (৩৫), আজিম উদ্দিন (৩২) ও আব্দুল আলীম (২৫) কে লালন পালন করে বিয়ে দেন। স্ত্রীকে অনেক আগেই ডিভোর্স দিয়েছেন আবু বক্কার সিদ্দিক।

বিয়ের পর তিন ছেলে আলাদা সংসার করে আসছেন। কিন্তু তাদের বাবার ভরণপোষন দেন না। খুব কষ্টে অন্যের সহযোগিতা ও নিজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে নিজের খরচ চালান আবু বক্কার সিদ্দিক। সন্তানদের ভরণপোষনের কথা বললে তাদের বাবাকে কয়েকবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করেছে। গত সোমবার দুপুরে আবারও তিন ছেলেকে ভরণপোষন চালানোর কথা বললে তারা তাদের বাবাকে জানায়, ‘তোমার কোনো ভরণপোষনের দায়িত্ব নিতে পারবো না, বাড়ি থেকে চলে যাও।’

বাবা আবু বক্কার সিদ্দিক তাদের এ কথার প্রতিবাদ করলে তিন ছেলে মিলে তার বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এলোপাথারী মারপিট করে। এ সময় তার জামা ছিঁড়ে যায়। তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা আহত হন। এক পর্যায়ে আবু বক্কার সিদ্দিককে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তিন ছেলে। পরে তিনি চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনায় সন্তানদের বিচার চেয়ে চাটমোহর থানায় মঙ্গলবার দুপুরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন অসহায় পিতা আবু বক্কার সিদ্দিক।

তিনি বলেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। এখন কি আর শরীরে এত জোড় আছে কামাই করে খাবো। ছেলেদের কাছে তাই ভরণপোষন চেয়েছি। তার জন্য এভাবে আমাকে মারবে, আমার বাড়ি থেকে আমাকেই বের করে দেবে, এটা মেনে নিতে পারবো না। আমি এর বিচার চাই।’

মুলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, ঘটনাটি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে, আমি চাই যে সন্তানরা তাদের বাবাকে ভরণপোষন দিতে পারে না, তাদের শাস্তি হোক।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সন্তানদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে শহরে কাজে গেছে বলে জানা গেছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: