জামালপুরে জমি দখল করে স্কুল স্থাপন

স্টাফ রিপোর্টার | ২ আগষ্ট ২০২২, ২৩:২৭

সংগৃহীত

জামালপুরের ইসলামপুরে জোর করে জমি দখলে করে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করায় ওই জমির মালিকদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুয়া জাল দলিল তৈরি করে জমি দখল করার পাশাপাশি সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।  

ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মহলগিরী গ্রামের ব্যাক্তি মালিকানাধীন ৬২ শতক জায়গা জোর করে দখল নিয়ে সেখানে বিগত ২০০০ সালে মহলগিরী নান্দেকুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন স্থানীয় এমপিওভুক্ত সভারচর দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো: শহিদুর রহমান। এরপর থেকেই জমির মালিকানা ও দখল নিয়ে সভারচর কারিপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিন, নজম উদ্দিন ও আহাজ উদ্দিনের পরিবারের সাথে বিরোধ তৈরি হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শহিদুর রহমানের। জমির মালিকানা ফিরে পেতে ২০২২ সালের মে মাসে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন আহাজ উদ্দিনের ছেলে করিম শেখ(৫৫)। সম্প্রতি মহলগিরী নান্দেকুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হলে জমির দখল নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। গত ১৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শহিদুর রহমান তার লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে মো: দেলোয়ার হোসেন(৪০), ছানোয়ার হোসেন(৪৫), মো: হুরমুজ আলী(৫৫), মোছা: আম্বিয়া খাতুন(৫৬) ও মোছা: পারভীন(৩৫) কে গুরুতর আহত করে। পরে তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মো: দেলোয়ার হোসেনকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়, বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই মো: শহিদুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ৩১ জনের নামে জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন মো: হুরমুজ আলী।      

মামলার বাদী হুরমুজ আলী বলেন, তনমামুদ ও খাঁন মামুদ দখলকৃত জমির প্রকৃত মালিক, যার সিএস খতিয়ান ১৯৬, দাগ ২৩৫, জমির পরিমান ৬০ শতাংশ। আরওআর মালিক তাদের ছেলে আমির উদ্দিন, নজম উদ্দিন ও আহাজ উদ্দিন, যার আরওআর খতিয়ান ৩১৮, দাগ ৬৩৫, জমির পরিমান ৬২ শতাংশ, যা তার ছেলেরা ভোগ দখল করে আসছে। খাঁন মামুদের ছেলে আহাজ উদ্দিন ৯৬১নং দাগে ৫৫ শতাংশ জমি বিক্রি করেন বিছার উদ্দিনের কাছে। যে জমির অবস্থান ওই বিদ্যালয় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। প্রধান শিক্ষক মো: শহিদুর রহমান মহলগিরী নান্দেকুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে ৬৩৫নং দাগ জাল দলিল করে বিছার উদ্দিনের নামে বিআরএস রের্কড করেন। রেকর্ডে বিআরএস খতিয়ান ৩৩৭, দাগ নং ৮০৫, জমির পরিমান ৬২ শতাংশ, যা পুরোটাই জাল রেকর্ড। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো: লুৎফর রহমান, মো: বেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন বলেন, মো: শহিদুর রহমান সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মহলগিরী নান্দেকুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তার পছন্দমত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও সে সভারচর দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও একই সঙ্গে সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া মহলগিরী নান্দেকুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, যা নিয়ম বহি:র্ভূত।

এ ব্যাপারে মো: শহিদুর রহমান জানান, তিনি সভারচর দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: